২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কোন্নয়ন

পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হোক জাতীয় স্বার্থে

-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ দিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের তিনি এ তাগিদ দেন। আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে তিনি আমাদের কূটনীতিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। বহির্বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হবে, এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অনুসৃত মূলনীতি রয়েছে, ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।’ স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরপরই এ ধরনের একটি পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হলেও এ নীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হয়েছে পারস্পরিক দেনা পাওনার ভিত্তিতে। তবে একটি দারিদ্র্যপীড়িত দেশ হিসেবে বিদেশের সাহায্য, দান, অনুদান ও ঋণপ্রাপ্তি এ সম্পর্কে বড় অবদান রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতায় সব সময় এগিয়ে এসেছে। ওই সব দেশে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ উপকৃত হয়েছে ব্যাপকভাবে। অন্যান্য মুসলিম দেশও নানাভাবে আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এমন একসময় মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক জোরদারকরণের আহ্বান জানালেন, যখন রোহিঙ্গা সঙ্কট উত্তরণে আমরা এসব দেশের ওপর দারুণভাবে নির্ভর করছি। অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের মধ্যে মূলত বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির আকাক্সক্ষাই প্রতিফলিত হয়েছে। দেশ অর্থনৈতিক বিকাশের এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যখন আমাদের জন্য বিদেশে বাজার অত্যন্ত প্রয়োজন। একই সময় দরকার দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিপুল বিনিয়োগ। জাতীয় অর্থনীতি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোতে আমাদের চেষ্টা চালাতে হবে যথাসাধ্য। আগে থেকেই বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত কর্মশক্তি বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমে নিয়োজিত হয়েছে। ওই অঞ্চল থেকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। এখন মধ্যপ্রাচ্যে পণ্যের বাজার সৃষ্টি এবং সে দেশগুলো থেকে বিনিয়োগ এনে আমরা উপকৃত হতে পারি। এ জন্য জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আমরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম দেশগুলো থেকে উপকৃত হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিরাট বিপদের মধ্যে রয়েছে। এই মহাসঙ্কট উত্তরণে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং এশিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র চীন। দুটো দেশের সাথেই বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাস্তবে দেখা গেছে, আঞ্চলিক রাজনীতির নানা সমীকরণে এ দেশ দুটো রোহিঙ্গা ইস্যুতে ন্যায়সঙ্গত অবস্থান নিতে পারেনি। নিপীড়িত মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে তারা কুণ্ঠাবোধ করেছে। যা হোক, বন্ধুত্বের পরীক্ষায় আমরা আবারো মুসলিম দেশগুলোকে সাথে পেলাম। মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়ায়। আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় সুবিচার পেতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করল। ওআইসি গাম্বিয়ার সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে এ ক্ষেত্রে।
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নে বিশ্ব এখন একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগকে জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে নতুন করে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপনের পরিকল্পনা নিতে হবে। যারা আমাদের বন্ধুত্বের মর্যাদা দেবে, আমরা তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করব। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে বিগত এক যুগে কিছুটা অস্পষ্টতা ছিল; বিশেষ করে জোর গলায় আমরা যাদের ‘সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ বলে ঘোষণা করছি, তারা যেন আমাদের কাছ থেকে শুধু সুযোগ নিতে চাইছেন। আমাদের দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাপারে তারা কোনো তোয়াক্কা করছেন না। মুসলিম দেশগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরির যে প্রচেষ্টা এ দেশের জন্মলগ্ন থেকে এই সময় সেটি যেন খানিকটা পথ হারিয়েছে। মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের অত্যধিক তাৎপর্যপূর্ণ তাগিদ প্রধানমন্ত্রী নতুন করে দিয়েছেন এবার। তাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে মুসলিম বিশ্বের সমর্থন ও সহযোগিতা বাংলাদেশের একান্ত দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement
ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুরের ইন্তেকাল থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথেপ্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

সকল