অবিলম্বে সমস্যামুক্ত করতে হবে
- ১২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে ময়মনসিংহের ত্রিশালে তার স্মৃতিবিজড়িত স্থানে, বেশ কয়েক বছর আগে চালু হয়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সেশনজটসহ নানা অনিয়মে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দিন সমস্যার শিকার। একটি জাতীয় দৈনিকে এ প্রসঙ্গে সেশন-জ্যামের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে আবাসন সমস্যা, নিয়ম ভঙ্গ, নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব, কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য দেয়া প্রভৃতি বিষয়।
প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে বিভাগ ভেদে এক থেকে দেড় বছর পর্যন্ত সেশনজটের কথা। জনৈক শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্ত দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি ২০১৬-১৭ সেশনে অর্থনীতি সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন। সে হিসাবে তার এখন থাকার কথা তৃতীয় বর্ষের শেষপর্যায়ে, অর্থাৎ ষষ্ঠ সেমিস্টারে। বাস্তবে তার মাত্র চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তাদের সেশনজট বছরখানেকের। আলোচ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছেÑ ময়মনসিংহ শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ১৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রীদের আবাসন সঙ্কটে ভুগতে হচ্ছে। তাদের মেসে থাকা নিয়ে নিরাপত্তাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আছে পরিবহনসঙ্কটও। প্রয়োজনীয়সংখ্যক বাস না থাকায় ময়মনসিংহ শহর থেকে আসা-যাওয়া খুব অসুবিধাজনক। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ বিভাগে সাত হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, যারা এসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
জানা গেছে, যে কয়েকটি বিভাগে সেশনজট বেশি, তার মধ্যে চারুকলার ২০১৩-১৪ সেশনের মাত্র সম্মান পরীক্ষা এত দিনে শেষ হয়েছে। তাই দেড় বছরের বেশি সেশনজট চলছে এ বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছেন প্রায় এক বছর।
সংশ্লিষ্ট বিভাগে শিক্ষকের ঘাটতি এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে জনবলের ঘাটতি ছাড়াও উত্তরপত্র মূল্যায়নে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিলম্ব করাও সেশনজটের কারণ বলে জানা যায়। এক যুগ পার হলেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য মাত্র একটি করে হল আছে। সর্বমোট ৪০০ শিক্ষার্থী এগুলোতে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, যা মোট শিক্ষার্থী সংখ্যার ৬ শতাংশেরও কম। পর্যাপ্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে শিক্ষক করার ‘তোড়জোড়’ চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ব্যক্তিবিশেষকে নিয়োগের সুবিধার্থে নিয়ম বদলিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুমোদন করার অভিযোগও বিদ্যমান। আরো বলা হয়েছে, বর্তমান ভিসির আমলে নিয়োগ দেয়া ৪৮ জন শিক্ষকের ১৭ জনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্র্থী। এ প্রসঙ্গে ভিসির বক্তব্য, ‘মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।’ তিনি নিজে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন থাকায় সেখানকার ‘ভালো বিশেষজ্ঞদের মেধা’কে কাজে লাগাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। ‘মনগড়া’ নম্বর দেয়ায় একজন শিক্ষকের নামে তার ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগের পর কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদুপরি অভিযোগ করা হয়েছে, নিছক রাজনৈতিক বিবেচনার ভিত্তিতে এক বিভাগের ফেল করা ছাত্রকে অন্য বিভাগে ভর্তি এবং কয়েকজনকে বিভাগ বদলানোর সুযোগ দেয়া হয়েছে। ভিসি এ ব্যাপারে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘মানবিক কারণে এটা করা হয়।’
মোট কথা, অপেক্ষাকৃত নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয় অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানাবিধ সঙ্কটের বলয় থেকে মুক্ত হতে পারছে না। এ নিয়ে কোনো কোনো সময়ে উত্তেজনাও দেখা গেছে।
আমরা মনে করি, জাতীয় কবির নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সমস্যা দূর করে শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদান, জ্ঞান-গবেষণা এবং মেধা বিকাশের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া উচিত। এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগের পরিণতি বরণ করলে তা হবে জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা