২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অনার্স

বেশির ভাগ কলেজে মানহীন শিক্ষা

-

অনার্সের অধিভুক্তি ও কোর্স কারিকুলাম অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অধিভুক্তির ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংখ্যা, তিন বছরের ফল, অবকাঠামো, পাঠাগার ও বই ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পূরণ করতে হয়। কলেজে অনার্স কোর্স চালু করতে গেলে প্রতিটি বিষয়ে অন্তত সাতজন শিক্ষক থাকার শর্ত রয়েছে। অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের কলেজ শিক্ষকদের সরকারিভাবে এমপিওভুক্ত করা হয় না। এ কারণে কাগজ-কলমে শিক্ষক নিয়োগ দেখানো হলেও বাস্তবে প্রতিটি বিষয়ে সাতজন শিক্ষক থাকেন না। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষা প্রদানে যে মানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা, তাও অনুসরণ করা হয় না। বহু কলেজেই অনার্স পর্যায়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। রাজনৈতিক কিংবা বিশেষ বিবেচনায় অনেক কলেজ অধিভুক্তির অভিযোগ রয়েছে। এতে শিক্ষার মান পড়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের ৮৫৭টি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি কলেজ ২৯৯টি। উপজেলা পর্যায়ে সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজ ৩০২টি। বেসরকারি কলেজ রয়েছে ২৫৬টি। বেসরকারি কলেজে প্রায় আট লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন।
সরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালুর অনুমতি না দিলে সেখানে শিক্ষক পদায়ন করা হয় না। অনেক সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে অনুমোদন দেয়া হয়। তবে বেসরকারি কলেজে অনার্স কোর্স চালুর ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে অনার্স কোর্স চালুর অনুমোদন দেয়ার পর কলেজগুলো তদারকি ও অধিভুক্তি নবায়নের নিয়ম রয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছেÑ তদারকির অভাবে বেশির ভাগ কলেজ ইচ্ছামতো চলছে।
বেশির ভাগ বেসরকারি কলেজে দেয়া শিক্ষার গুণগত মান না থাকায় উচ্চশিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ কারণে ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষিত বেকার তৈরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে এটি জাতীয় জীবনে গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশে দিন দিন উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সারা দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। এর মধ্যে ১০ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী যারা উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস। অর্থাৎ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যন্ত এলাকা, মফস্বল ও উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত ভৌত অবকাঠামো, সুপরিসর শ্রেণিকক্ষ, পাঠাগার ও সেমিনার কক্ষ এবং প্রতিটি বিষয়ে অন্তত সাতজন শিক্ষক না থাকলে অনার্স খোলার অনুমতি দেয়া হবে না। সরকারের এ নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা চিঠি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, সরকারি কলেজগুলোতেও শর্ত পূরণ না হলে ভবিষ্যতে নতুন কোনো বিষয়ে অনার্স চালুর অনুমতি দেয়া হবে না।
আমরা মনে করি, সরকারের সিদ্ধান্তটি উচ্চশিক্ষার জন্য ইতিবাচক। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এটি বলা অত্যুক্তি হবে না যে, দেশে অনেক সরকারি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয় না বা করা যায় না। তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় অনেক সময় পিছু হটে সরকার। সবার প্রত্যাশা, দেশের উচ্চশিক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উপজেলা ও মফস্বল এলাকার কলেজে লাগামহীন অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স বন্ধে পদক্ষেপ নেবে। তাতে দেশে উচ্চশিক্ষার মান এখনো যেটুকু রয়েছে তা অবনতি থেকে রক্ষা পেতে পারে। এমনিতেই বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের দেশের শিক্ষার মান তলানিতে। বৈশ্বিক শিক্ষাসূচকে হাজারের তালিকাতেও নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার

সকল