২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
হঠাৎ বেড়েছে ওষুধের দাম

মূল্য নির্ধারণে ’৮২-এর আইন চাই

-

বাজারে ওষুধের দাম আবার বেড়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির পরিমাণ শুধু অস্বাভাবিক নয়, রীতিমতো উদ্বেগজনক। অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগের একটি ওষুধের দাম এত দিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো। সেটির দাম এখন এক হাজার ২০০ টাকায় উঠেছে। এটি ঘটেছে একটি কোম্পানির তৈরি ওষুধের ক্ষেত্রে। অন্য কোম্পানিগুলোর এই ওষুধের দামও বেড়েছে প্রায় একই অনুপাতে।
একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। সেই সাথে অন্যান্য ওষুধের দাম কতটা বেড়েছে, তারও নমুনা তুলে ধরেছে পত্রিকাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস ডায়াবেটিসের মেটফরমিন হাইড্রোক্লোরাইড জেনেরিকের ৮৫০ মিলিগ্রামের যে ট্যাবলেট বিক্রি করছে প্রতিটি আড়াই টাকা এবং ৫০০ মিলিগ্রামের দেড় টাকা করে, ওই একই ওষুধ অন্যান্য কোম্পানি তিন থেকে পাঁচ টাকা দামে বিক্রি করছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ অমিপ্রাজলের ক্ষেত্রেও দামের নৈরাজ্য চলছে সমানে। রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস যে ওষুধের দাম রাখছে চার টাকা, সেই একই ওষুধ অন্যরা বিক্রি করছে পাঁচ থেকে ছয় টাকায়। কেবল এই ক’টি ওষুধই নয়, গত এক মাসের মধ্যে বেশির ভাগ ওষুধ কোম্পানিই বিভিন্ন ধরনের ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো কোম্পানি গত ১ ডিসেম্বর থেকে দাম বাড়িয়েছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারীদের কেউ বলছেন, অন্যরা বাড়িয়েছেন বলে তারাও দাম বাড়িয়েছেন। কেউ বলছেন ডলারের দর বেড়ে যাওয়া বা উন্নত দেশ থেকে মানসম্পন্ন কাঁচামাল আনার খরচ বেড়ে যাওয়ার কথা। এর আগেও চলতি বছরেই বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার ওষুধের দাম বাড়িয়েছে ওষুধ কোম্পানিগুলো। তখনও নানা রকম যুক্তি দিয়ে নিজেদের ফটকাবাজারির পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেছেন ওষুধ শিল্পের মালিকরা। এ দিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একেবারেই অহেতুক এই দাম বাড়িয়েছে একশ্রেণীর ওষুধ কোম্পানি। সরকারের উচিত বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করা। না হলে মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়ে যাবে, চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়বে।
কিন্তু বিষয়টি নজরে পড়েনি খোদ ওষুধ প্রশাসনের। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক দৈনিকটিকে বলেছেন, তিনি খোঁজখবর নেবেন এবং এমন অসম্ভব কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মহাপরিচালক যা-ই বলুন না কেন, আসলে তাদের তেমন কিছু করার নেই। আইন অনুযায়ী, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর কেবল সরকারিভাবে উৎপাদিত ১১৭ ধরনের ওষুধের দাম নির্ধারণ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এর বাইরে দেশের সর্বমোট ২৬৯ অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যে প্রায় ২৪ হাজার রকমের ওষুধ তৈরি করে, সেগুলোর দাম তারাই নির্ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় বলা হয়, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাবহির্ভূত ওষুধের দাম নিজ নিজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে। ২৪ বছর ধরে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো যে দাম চাইছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সেই দামেই বিক্রির অনুমতি দিচ্ছে। ফলে ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি থেকে যাচ্ছে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অথচ ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশে যেকোনো ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের ছিল। দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে ওষুধের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার আবারো সরকারের ওপর ন্যস্ত করে তা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল