২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে হাসপাতাল

হয় সংস্কার, না হয় হোক পরিত্যক্ত

-

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত সরকারি হাসপাতালের বিরাট একটা অংশের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনগুলোতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে চিকিৎসারত রোগী ডাক্তার নার্সরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা নিতে যান। সেবা শুশ্রƒষা পেয়ে সুস্থ হন। এখন সেই হাসপাতালই যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে সেখানে অসুস্থ মানুষ কোন যুক্তিতে যাবেন। যেকোনো সময় একটি দুর্ঘটায় পড়ে অসুস্থ মানুষটি আরো বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারেন। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে হাসপাতাল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ভবনের নিরাপত্তার প্রশ্ন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে দেশের প্রধান প্রধান হাসাপাতাল ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছে। অবিলম্বে ব্যাপারটি সরকারকে বিবেচনা করে দেখতে হবে। চিহ্নিত ভবনগুলো নিয়ে অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সহযোগী একটি দৈনিক খবর দিয়েছে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা দেশে ১৩৩৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে গণপূর্ত অধিদফতরের নির্মিত বড় হাসপাতাল ভবন ৬০টি এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর নির্মিত ভবন ১২৭৪টি। মাঠপর্যায় থেকে প্রেরিত তথ্যের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসের বেশির ভাগ ভবনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের বেশির ভাগ ভবন ১৯৫৫ সালে নির্মিত। কিছু ভবন আরো আগে ১৯১৮ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যে নির্মিত। এর মধ্যে কিং এডওয়ার্ড ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে এখনো রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ দুটো হাসপাতাল দেশের প্রধান সরকারি হাসপাতাল। এগুলোতে সর্বোচ্চসংখ্যক রোগী সেবা পেয়ে থাকেন। এগুলোতে জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। সরকারকে নানা কারণে এ দুটো হাসপাতালের ওপর বেশি নির্ভর করতে হয়। তার পরেও বছরের পর বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে হাসপাতাল দুটোতে চিকিৎসা চলছে।
মহাখালীতে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় নিরাময় কেন্দ্র-আইসিডিডিআরবি’র অনেক ভবনই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। মহাখালীতে বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থার একটা ভিত তৈরি হয়েছে। এখানে অসুখ-বিসুখ ও নিরাময় নিয়ে গবেষণা হয়। অনিরাপদ ভবনে এমন গুরুত্বপূর্ণ কর্ম এভাবে চলতে পারে না। এ ছাড়া খুলনা রাজশাহী, বরিশাল ও ময়মনসিংহের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ভবন জরাজীর্ণ। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন থেকে সারা দেশে আরো অসংখ্য হাসপাতালে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থাকার কথা জানা যাচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অন্তত চিকিৎসার কাজ চলতে পারে না। মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১৩৩৪টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এ তথ্য কতটুকু নির্ভরযোগ্য তা আমরা জানি না। তবে হাসপাতালের ভবন নিয়ে একটা পূর্ণ জরিপ হওয়া দরকার। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ আশঙ্কাজনক ভবনগুলো যাচাই করে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন দেবে; তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেগুলো অতি ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। সেগুলো থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম সরিয়ে আনতে হবে। সংস্কার করে কোনো ভবন যদি ব্যবহারের উপযুক্ত মনে করা হয় সেগুলো অতিসত্বর সংস্কার করতে হবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো ভেঙে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে থেকে চিকিৎসা চলতে পারে না। সময় থাকতে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো ধরনের বিপর্যয় ঘটে গেলে কিন্তু তার প্রতিকার পাওয়া যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
পিরোজপুরে বাসের ধাক্কায় নদীতে ৪ মোটরসাইকেল ফরিদপুরে নিহতদের বাড়ি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী টিকটকে ভিডিও দেখে পুরস্কার, প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে: পাটমন্ত্রী মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সালাম নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ সচিব সৌরশক্তি খাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় জার্মানি ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি’ মোদি কি হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের চেনা রাজনীতিতে ফিরছেন? টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল