ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকেই
- ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সারা দেশের মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। কোনো ঘোষণা ছাড়াই এ ধরনের ধর্মঘটে জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আসা অসংখ্য যাত্রী বিপদে পড়ে যান। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ পথের, অর্থাৎ সব ধরনের যাত্রীই দিশাহারা হয়ে যান। তা ছাড়া, পণ্য সরবরাহ ও রোগী পরিবহনের জরুরি কাজে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের হঠাৎ করে এমন ধর্মঘটে বারবার নাকাল হতে হচ্ছে দেশবাসীকে। গত কয়েক দিনে হঠাৎ করে রাস্তা থেকে গাড়ি উধাও হয়ে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। যানবাহনের মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অঘোষিতভাবে এ ধর্মঘট ডেকেছে। পরে জানা গেল, তারা বুধবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। অন্য দিকে, একেবারের শীর্ষপর্যায়ের মালিক-শ্রমিক নেতারা এমন অবস্থান নিয়েছেন, যার ফলে রাস্তায় নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পরিবহন খাতে এমন বিশৃঙ্খলা দিনের পর দিন মেনে নেয়া যায় না কিছুতেই।
রাস্তায় বেপরোয়া যান চলাচলে যাত্রী ও পথচারীর মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিন সড়কে মৃত্যুর পরিসংখ্যান অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বেশি। পরিস্থিতির পরিবর্তনে নতুন একটি সড়ক আইন করা হয়েছে। এ আইনে চালক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে সে ব্যাপারে মালিক-শ্রমিকদের আপত্তি থাকতে পারে। এ আপত্তির সুরাহা করার বাঞ্ছিত পথ রয়েছে। সরকারের উচ্চ মহলের সাথে বৈঠক করে মালিক-শ্রমিক নেতারা এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারেন। সেটি পছন্দ না হলে তারা যেতে পারেন আদালতে। অথচ এসব বৈধ পথে যাওয়ার আগে তারা বেছে নিয়েছেন রাস্তায় নৈরাজ্য প্রদর্শন করাকে। শ্রমিকরা নিজেরা গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেই ক্ষান্ত হননি। তারা সড়কে চলাচলরত যানবাহনে বাধা দিয়েছেন। তাদের সহযোগী চালক ও সহযোগীদের ওপরেও হামলা করেছেন। তাদের লাঞ্ছিত করেছেন। কোথাও তারা ভাঙচুর করেছেন যানবাহন। অন্য দিকে, সারা দেশের অসংখ্য মানুষ পড়েছেন রাস্তায় বিপদে। অনেকে মাইলের পর মাইল বহু কষ্টে হেঁটে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। পণ্যপরিবহনে ব্যাপক বিঘœ ঘটার কারণে কাঁচাবাজারে পণ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যের মধ্যে এ অবস্থায় দাম বেড়ে গেছে শাকসবজিরও। নতুন আইনে আপত্তির ব্যাপার হচ্ছে অজামিনযোগ্য ধারা, পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব পুলিশ পাওয়া, অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান ইত্যাদি। রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে যখন প্রাণহানি ঘটে, সেই তুলনায় এ আইনের বিধানগুলোকে বিবেচনা করে দেখতে হবে। এর পরও যদি মালিক-শ্রমিকদের আপত্তি থাকে সেগুলো আলোচনায় আসতে পারে। কিন্তু রাস্তায় নৈরাজ্য সৃষ্টি দুঃখজনক এবং অবাঞ্ছিত।
সংবাদমাধ্যমে জানা গেছে, যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করে অবর্ণনীয় জনভোগান্তির পেছনে প্রভাবশালী শ্রমিক ও মালিক নেতাদের ইন্ধন রয়েছে। যানবাহনের ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরানোর ক্ষেত্রে তারা বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি করে রেখেছেন। এই নেতারা আবার শাসক দলের প্রভাবশালী সদস্য। এখন সরকারকে জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনভোগান্তি লাঘব করার স্বার্থে গ্রহণ করতে হবে কঠোর অবস্থান। রাস্তায় কেউ যেন তাদের খেয়াল খুশি মতো ভোগান্তি করার সুযোগ না পান, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আপাতত মালিক-শ্রমিক নেতারা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিন্তু আবারো ধর্মঘটে দেশবাসী নাকাল হবেন না, সেই নিশ্চয়তা নেই। তাই যাদের হাতে মালিক-শ্রমিকের ‘নাটাই’ রয়েছে, তাদের সাথে একটা বিহিত করতে হবে যাতে করে রাস্তায় মানুষকে বারবার ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা