২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
৮ শতাংশ মানসিক রোগীও চিকিৎসা পান না

১৬ কোটির দেশের মাত্র আড়াই শ’ ডাক্তার!

-

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগীর মোট সংখ্যা বেড়েছে। দেশের অন্তত প্রায় ১৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এবং ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক (৭-১৪ বছর বয়সী) মানসিক সমস্যায় ভুগছে। মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সর্বশেষ জাতীয় জরিপে এই তথ্যগুলো জানা গেছে। সদ্য প্রকাশিত এই জরিপ প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিষণœতা, উদ্বেগ এবং বেদনা বা অবসাদ হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের মানসিক ব্যাধির প্রধান কারণ।
সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে এই জরিপ চালিয়েছে। জানা যায়, বাংলাদেশে শিশুদের মানসিক অসুস্থতার বড় কারণ হলো, পর্যাপ্ত স্নায়বিক বিকাশ না ঘটা এবং উৎকণ্ঠা। সবিশেষ উদ্বেগজনক একটি বিষয় হচ্ছে, এই দেশে আজো মাত্র ৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানসিক রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা আছে। যারা এ জন্য ডাক্তারের কাছে যান, তাদেরও ১৭ শতাংশ চিকিৎসার কাজ অসম্পূর্ণ রেখে দিচ্ছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, বাংলাদেশের ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ শিশুই মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। যে অল্পসংখ্যক শিশু সেবা পায়, তাদেরও ২৯ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে চিকিৎসার কাজ শেষ করা হয় না। কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের কারণে এ যুগেও অনেক রোগীর মানসিক রোগের চিকিৎসা করা হয় না। নারী-পুরুষ প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের প্রায় ১২ শতাংশ আগ্রহী নন চিকিৎসা নিতে। তাদের মধ্যে নারীদের হার বেশি। দেশের শিশুদের প্রায় ২৩ শতাংশ ঘুমের সমস্যায় ভুগছে। প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু বিনা অনুমতিতে স্কুল কামাই করছে। জরিপে আরো দেখা গেছে, এ দেশের মানসিক রোগী নারী-পুরুষের গড়ে ১৬ শতাংশের বেশি তাদের মানসিক সমস্যার কারণে অপবাদের শিকার।
বাংলাদেশে মানসিক অসুস্থতার মাত্রা যে বাড়ছে, সে ব্যাপারে জানা গেছে, ২০০৫ সালে পরিচালিত একই ধরনের জরিপের সময়ের চেয়ে মানসিক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে, মানসিক রোগের চিকিৎসা যারা নেন, তাদের ৪০ শতাংশেরও কম যাচ্ছেন মানসিক রোগের চিকিৎসকদের কাছে। বরং তাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ চিকিৎসার জন্য সরকারি সাধারণ হাসপাতালের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। আলোচ্য জরিপদলের সূত্রে জানা যায়, ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে মানসিক চিকিৎসক আছেন মাত্র আড়াই শ’।
ওই জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করার অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঘোষণা করেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তিনি আরো বলেছেন, সরকারের উদ্যোগে মানসিক স্বাস্থ্য উইং খোলা হবে এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় তা অন্তর্ভুক্ত হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি আশ্বাস দেন, ২০২০ সালের প্রথম দিকে ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশল’ গৃহীত হলে মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার বিষয়টি দৃশ্যমান হবে।
শিশু-কিশোরদের প্রায় অর্ধেক কোনো অনুমতি ছাড়াই স্কুলে গরহাজির থাকে। অভিভাবকরা ছেলেমেয়েকে খুব কম সময় দেন এবং তাদের লেখাপড়ার খোঁজখবর নেন সামান্য। এসব তথ্যও জরিপের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানসহ পোষ্যদের ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করলে ক্লাস ফাঁকি দেয়া এবং তার জের ধরে পরীক্ষা না দেয়ার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা অনেক কমে যেত।
শুধু ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিত করার স্বার্থেই নয়, দেশের নারী ও পুরুষ, প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্বিশেষে সব নাগরিকের দৈহিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা সরকারের একটি প্রধান দায়িত্ব। মানুষের এই মৌলিক প্রয়োজন পূরণের জন্য ডাক্তার, হাসপাতাল, সরঞ্জাম এবং চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির সুযোগÑ সব কিছু পর্যাপ্ত থাকতে হবে। গতানুগতিক কায়দায় দিবস পালন, সাড়ম্বর প্রচারণা আর রাজনৈতিক কথামালার মধ্যে তৎপরতা সীমিত থাকলে এই লক্ষ্যে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল