২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ভোলায় সম্প্রীতি অটুট রাখা জরুরি ]

বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন

-

ফেসবুকে আল্লাহ ও শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সা:কে নিয়ে কটূক্তি করার জের ধরে ভোলার বোরহানউদ্দিনে প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত ও তিন শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনা শুধু অনভিপ্রেত নয়, অত্যন্ত বেদনাদায়ক। গুলিতে হতাহত হওয়া ছাড়াও এখন এলাকার হাজার হাজার লোক মামলার মুখে পড়েছে। এতে ‘গ্রেফতারবাণিজ্য’ হতে পারে বলে মানুষের আশঙ্কা। অতীতের নজির থেকে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। ভোলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নেবে বলে সবার প্রত্যাশা।
ঘটনার পরম্পরা বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শুক্রবার যখন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা দেয় তখনই পুলিশের অনুধাবন করা উচিত ছিল, এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে জনসম্পৃক্ততা বেড়ে প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। শুরুতেই পুলিশের উচিত ছিল স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা এবং পরিস্থিতির অবনতি রোধে সহায়তা চাওয়া। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, ‘আত্মরক্ষার্থে’ গুলি চালিয়েছে তারা। কিন্তু অনেকে মনে করেন, পুলিশ পরিস্থিতির গভীরতা বিবেচনায় নিয়ে আরো সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সাথে এগোলে এই অঘটন এড়ানো যেত।
পুলিশ প্রশাসন বিক্ষোভ প্রশমনে দু’জন ইমামের সাথে বৈঠক করে পূর্বনির্ধারিত প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত করতে রাজি করিয়েছিল। অথচ সেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সবার মাঝে প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ ছাড়া প্রয়োজন ছিল স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা। তাও করা হয়নি। পুলিশ প্রশাসন কেন এই উদ্যোগ নেয়নি তা খতিয়ে দেখা উচিত। কোনো পক্ষের ইন্ধন এ ক্ষেত্রে কাজ করে থাকলে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
ঘটনার সূচনা গত শুক্রবার এক যুবকের ফেসবুক আইডি থেকে আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ সা:-এর প্রতি কটূক্তি করে দেয়া একটি পোস্ট ঘিরে। এতে স্থানীয় মুসলিম জনগণ ক্ষুব্ধ হয় এবং রোববার বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। তার আগে ওই যুবক থানায় জিডি করেন, তার ফেসবুক আইডি ‘হ্যাক করা হয়েছে’। এ ধরনের পরিস্থিতিতে স্বার্থান্বেষী মহল সুযোগ নেয়ার অপচেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এর আগেও আমরা দেখেছি, কক্সবাজারের রামুতে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছিল কুচক্রী মহল।
ঘটনার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আন্দোলনকারী সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ উত্থাপিত যে ছয় দফা দাবি করা হয়েছে; তার মধ্যে আছে জেলা ও থানা থেকে এসপি এবং ওসির প্রত্যাহার; ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করার অনুমতি; আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা; হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেয়া; আটক ব্যক্তিদের মুক্তি ও অপরাধীদের শাস্তিদান। এর মধ্যে প্রথম পাঁচ দফা দাবি প্রশাসনই বাস্তবায়ন করতে পারে। প্রশাসন এ বিষয়ে যত দ্রুত প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ তত তাড়াতাড়ি প্রশমিত হবে। চারজন মানুষ নিহত হওয়ার ক্ষতি অপূরণীয়। তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হলে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হলে, সেটি সংশ্লিষ্ট সবার জন্য সান্ত্বনা হয়ে থাকবে। আর হতাহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা সরকার থেকে করার উদ্যোগ নিতে হবে এখনই।
এ ঘটনায় গঠন করা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি। আমরা মনে করি, প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সহায়ক হতে পারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত। তাতে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত এবং কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা সহজ হবে। যথাযথ বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রথমে সত্যটি জানা দরকার। সত্য উদঘাটন হলেই যথাযথ বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য ক্যাম্পে ডাক পেলেন ১৭ ক্রিকেটার, নেই সাকিব-মোস্তাফিজ উত্তর গাজায় আবারো ইসরাইলের গোলাবর্ষণ ধামরাইয়ে তাপদাহে জনজীবন কাহিল, ডায়রিয়াসহ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশী কেএনএফ সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতাসহ কারাগারে ৭ স্থিতিশীল সরকার থাকায় দেশে উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র বাতিল রাজশাহীর পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ শিশুর মৃত্যু দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক দুমকিতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সভাপতির নির্দেশে ক্লাস চালু সিদ্ধিরগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ ৩ ডাকাত গ্রেফতার

সকল