২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ট্রানজিটও পাচ্ছে ভারত

বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী?

-

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় দেনাপাওনার বিষয়টি ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। দেশে এ নিয়ে সমালোচনার মূল বিষয় হলো একচেটিয়াভাবে ভারত সব আদায় করে নিচ্ছে। ভারতের প্রাথমিক যত সব চাওয়া-পাওয়া সেসব পূরণ করার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয়স্তরের চাহিদাও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘উদারতার সাথে’ পূরণ করা হচ্ছে। এর বিপরীতে বাংলাদেশের একেবারে মৌলিক চাহিদাগুলো পর্যন্ত মেটানোর ব্যাপারে ভারত গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে দেশের মানুষ ব্যাপক বঞ্চনা অনুভব করছে। জনগণ আশঙ্কা করছে, এভাবে একে একে বড় পড়শি তার সব চাওয়া পূরণ করে নিলে একসময় বাংলাদেশের আর তাদের কাছে কোনো প্রয়োজনীয়তাও থাকতে পারে না এবং তারা বাংলাদেশকে মুখাপেক্ষী করে রাখবেন। মানুষ মনে করে বর্তমান অবস্থার জন্য ক্ষমতাসীন সরকার দায়ী। তারা দেশের স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান সমুন্নত রাখার চেয়ে নিজেদের দলীয় অবস্থানকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এতে করে কার্যত জাতীয় স্বার্থ বিঘিœত হচ্ছে।
ভারত এবারে বাংলাদেশের প্রধান দু’টি সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে গেছে। ফলে সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তাদের কলকাতা বন্দরে আসার আর প্রয়োজন পড়বে না। এ দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দেশের পণ্যজট সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে। বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর আগে ভারতকে এমন সুবিধা দেয়া যুক্তিসঙ্গত নয়। এমন বিরাট সুবিধা পাওয়ার বিপরীতে ভারতের পক্ষ থেকে পরিশোধযোগ্য মাশুল উল্লেখযোগ্য নয় বলে জানা যায়। দু’পক্ষের স্বীকৃত বিধি অনুযায়ী বন্দরে ভারতীয় পণ্য পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশের যানবাহন ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে দেয়া হলে বাংলাদেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করা হবে।
কারণ ট্রানজিট সুবিধা পেলে ভারতের পণ্য বাংলাদেশী যানবাহনে বহনের বাধ্যবাধকতা থাকবে না। বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় মোটর ভেহিক্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ) বাস্তবায়নের কথা ছিল। ছোট্ট দেশ হলেও ভুটান এ উদ্যোগে ভেটো দিয়েছে। নিজেদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে এ কাজে আপত্তি করতে তাদের কোনো ধরনের দ্বিধা হয়নি। অপর দিকে, ভারত বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয়ভাবে এ সুযোগ আদায় করে নেয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে অনুকূল সাড়া দিয়েছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় যান চলাচল চুক্তি সম্পাদিত হলে একচেটিয়া সুবিধা নেবে বড় দেশ ভারত। এতে করে কার্যত তারা ট্রানজিট সুবিধা পেয়ে যাবেন।
ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী; আমরা দেশটির জনগণের সুখ সমৃদ্ধি বাড়ানোর বিপক্ষে নই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা কেবলই তাদের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করার রসদ জুগিয়ে যাচ্ছি। এর বিপরীতে ন্যূনতম দায়িত্বও তারা পালন করছেন না। তিস্তার পানি চুক্তি দেশটি ঝুলিয়ে রেখেছে দীর্ঘ দিন। সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে আমরা ভারতের পক্ষ থেকে সামান্য সহযোগিতাও পাইনি। তদুপরি, নিজের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করছে ভারত। বৃহৎ প্রতিবেশী হিসেবে তাদের এমন একগুঁয়ে অবস্থান বাংলাদেশের মানুষকে পীড়িত করে। এ অবস্থায় মুফতে ট্রানজিট সুবিধা একচেটিয়াভাবে দিয়ে দেয়া হলে আমাদের বঞ্চনা আরো বাড়বে। ছোট দেশ হলেও দৃঢ়তা দেখানো প্রয়োজন। ট্রানজিট পেলে ভারতের যানবাহন বাংলাদেশের রাস্তায় যে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে তার খেসারত কে দেবে? সে হিসাব আমাদের করতে হবে অবশ্যই। অন্ততপক্ষে ভুটান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে

সকল