১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মেট্রোরেল প্রকল্প

ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে রাখুন

-

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ নগরীগুলোর একটি ঢাকা। নানা কারণে সারা দেশ থেকে মানুষ প্রতিনিয়ত ঢাকায় আসছে। প্রতিদিন ঢাকায় যোগ হচ্ছে প্রায় দুই হাজার মানুষ। ক্রমবর্ধমান মানুষ বা যাত্রী পরিবহনে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ ভূমিতে সড়ক থাকা প্রয়োজন। সেখানে ঢাকায় আছে মাত্র ৭ শতাংশ। তদুপরি, বিদ্যমান সড়কপথের এক-তৃতীয়াংশে কোনো গণপরিবহন ব্যবস্থা নেই। এ দিকে, নিয়মিত বাড়ছে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি। সড়কে বাড়ছে যানজট। চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে লাখো মানুষ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, যানজটে রাস্তায় আটকে থেকে গড়ে দিনে নষ্ট হচ্ছে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। বিশ্বব্যাংকের তথ্য, এখন ঢাকায় গাড়ি চলে ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার বেগে; ২০২৫ সালে চলবে চার কিলোমিটার গতিতে। অন্য এক গবেষণা মতে, বিশ্বের ২৩০ শহরের মধ্যে বসবাসের দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থান ২১৪ নম্বরে। সুগঠিত নগরকাঠামো ও নিরাপদ রাস্তাঘাট ছাড়া কোনো নগরই বসবাসযোগ্য হতে পারে না।
রাজধানী নগরীকে বসবাসযোগ্য করতে সরকার গত সাড়ে ৯ বছরে ছয়টি বড় ফ্লাইওভার আর ওভারপাস উদ্বোধন করেছে। একটি মেট্টোরেল, একটি বিআরটি, দু’টি এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। ‘অচল ঢাকা সচল করতে’ পাঁচটি পথে চালু হবে মেট্টোরেল। এতে বিনিয়োগ দরকার হবে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। মেট্টোরেলের এ পাঁচটি রুটের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণকাজের খোঁড়াখুঁড়িতে অনেক ভোগান্তি সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানুষ তা সয়ে যাচ্ছে।
প্রকল্প যথাসময়ে শেষ না করা যেন আমাদের ‘জাতীয় সংস্কৃতি’। এটি আসলে অদক্ষতা দায়িত্ববোধের অভাব ও ব্যর্থতারও উদাহরণ। যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করতে না পারলে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। সেইসাথে বাড়ে ঋণের সুদ ইত্যাদি ব্যয়ও। কর্তৃপক্ষ ভাবেন কি না জানি না, দরিদ্র এই দেশটির একটি টাকাও যদি সাশ্রয় করা যায় তাহলে তা জনগণের কল্যাণেই ব্যবহৃত হতে হবে। বরং দেখা যাচ্ছে জনগণের টাকা কে কিভাবে কত নিপুণ কৌশলে লুটে নিতে পারবে সেই প্রতিযোগিতা চলছে দেশজুড়ে। রূপপুরের বালিশ থেকে শুরু করে গোপালগঞ্জের পর্দা পর্যন্ত, অস্বাভাবিক ব্যয় দেখানোর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ তছরুফের যেসব ঘটনা সম্প্রতি উদ্ঘাটিত হয়েছে, সেগুলো এই অসুস্থ প্রতিযোগিতারই নমুনামাত্র।
নয়া দিগন্তের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজধানীতে বাস্তবায়নাধীন মেট্টোরেল প্রকল্পের সময় ও ব্যয় দুটোই আবার বাড়ছে। যানজট নিরসন করে জনদুর্ভোগ অবসানের লক্ষ্যে সরকার রাজধানীতে মেট্টোরেল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বিভিন্ন ধাপে। এখন চলমান রয়েছে মেট্টোরেল লাইন-৬ প্রকল্পটি। উত্তরা থেকে পল্লবী, সোনারগাঁও হোটেল হয়ে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্টোরেল স্থাপনের কাজ চলছে। এ জন্য অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। ২০১২ সালে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। তবে কাজ শুরু করতেই পেরিয়ে যায় চার বছর। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্প চলমান অবস্থায় মেট্রোরেলের লাইন-৫-এর মাধ্যমে হেমায়েতপুর-আমিনবাজার-গাবতলী-মিরপুর-১ ও ১০, কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে। এসব রুটের কোথাও পাতাল, আবার কোথাও এলিভেটেড লাইন হবে। কিন্তু জানা যায়, প্রকল্প-৬-এর চেয়ে প্রকল্প-৫-এ ব্যয় হবে প্রায় দ্বিগুণ।
বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যয়, বিশেষ করে সড়ক ও সেতু নির্মাণের ব্যয় অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি হওয়ার বিষয়টি আগেও আলোচনায় এসেছে এবং বিশেষজ্ঞরা অযৌক্তিক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু বাড়তি ব্যয়ের প্রবণতা বন্ধ হয়নি আজো। আমরা আশা করব, মেট্রোরেলের ব্যয় যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত পর্যায়ে রাখার ব্যাপারে সরকার মনোযোগী হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ, মর্টার শেলের শব্দে প্রকম্পিত সীমান্ত এলাকা হামলার ব্যাপারে ইসরাইল নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে : নেতানিয়াহু ইরানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পাশ্চাত্যের দেশগুলো সিদ্ধিরগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, নগদ টাকাসহ ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় গাজায় মানবিক প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ : রাশিয়া পিকআপচালককে হত্যা করে রেললাইনে লাশ ফেল গেল দুর্বৃত্তরা এক মাস না যেতেই ভেঙে গেলো রাজকীয় বিয়ে! ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭ নোয়াখালীতে মেলায় সংর্ঘষ নিহত ১

সকল