২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিশ্ববিদ্যালয়ে টর্চার সেল

বন্ধ করার দায়িত্ব সরকারের

-

সহপাঠী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েট। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ জন শিক্ষার্থীকে। এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনে নিহত, আবরারের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসতে না পারা এবং জানাজায় উপস্থিত হতে না পারার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষকেরা স্বীকার করেছেন, তারা ছাত্রলীগ নেতাদের দাপটের কাছে ছিলেন অসহায়; তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে পারেননি।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি তো বন্ধ করার ঘোষণা এলো, তবে এটি কিভাবে কতটুকু কার্যকর হবে সে ব্যাপারে সন্দেহ পোষণের অবকাশ আছে। আবারো তারা শিক্ষক নেতাদের দাপটের কাছে অসহায় বোধ করবেন কি না। প্রশ্ন আসে, সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা টর্চার সেলগুলো কি বন্ধ হবে? তা বন্ধ করার দায়-দায়িত্ব কাদের?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলে হলে ‘টর্চার সেল কালচার’ দীর্ঘ দিন ধরে চালু আছে। তা গণমাধ্যমে মাঝে মধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। ফলে এই বিষয়টি দেশের সবাই জানে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানত না; তা কেউ বিশ্বাস করে না। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যেসব শিক্ষার্থী কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়, শুধু পড়াশোনার জন্যই যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা, তাদের ওপর বারবার নেমে আসে দুঃসহ নির্যাতন। কিন্তু নিজের ভবিষ্যৎ জীবন গড়ার কথা চিন্তা করে অনেকেই মুখ খোলেন না। হয় নির্যাতন সহ্য করেই নেতাদের সালাম ঠুকে, অন্যায় আদেশ-নির্দেশ মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকে থাকেন, নতুবা জান বাঁচাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় প্রতিটি হলেই চালু রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের এই টর্চার সেল। খবরে প্রকাশ, ১২টা বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক কক্ষে চালু রয়েছে টর্চার সেল। সেখানে লাঠি, হকিস্টিক, ক্রিকেট স্টাম্প, চেইন, লোহার রড ছাড়াও ইলেকট্রিক শক দেয়ার মতো ভয়ঙ্কর সব নির্যাতন সামগ্রী আছে।
হল নিয়ন্ত্রণকারী ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের মিছিলে না গেলে, নেতাদের সঙ্গ না দিলে, ওদের সালাম না দিলে, নেতার কমান্ড না মানলে কিংবা ভিন্ন মতাবলম্বী হলে তার ভাগ্যে টর্চার রুম অথবা গেস্টরুমে ‘রিমান্ড বা শাস্তি’ অবধারিত। প্রবীণ শিক্ষকেরা ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ছাত্রদের ধরে নিয়ে নানাভাবে নির্যাতন চালানোর জন্য এসব টর্চার সেল বা গেস্টরুম ব্যবহার করা হয়। ছাত্রীদের হলেও রয়েছে জঘন্য এই কালচার। অনেক সময় র্যাগিংয়ের নামে চলে এটা। টর্চার সেলের নির্যাতনে আবরারের মতো অনেকের জীবন ও ভবিষ্যৎ শেষ করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনেকে হয়েছেন পঙ্গু। অনেকে লেখাপড়া শেষ না করেই হল ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
এবার আন্দোলনের তোপের মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ভিসি। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দেননি এসব টর্চার সেল বন্ধ করে দেয়ার। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাস বন্ধের ঘোষণা আসতে হবে রাজনৈতিক শীর্ষ মহল থেকে। ঘোষণা আসতে হবে টর্চার সেলগুলোর চিরতরে অবসানের। প্রশ্ন হচ্ছেÑ কে নেবে এর দায়? দেশবাসীর অভিমত, এ দায়িত্ব মূলত সরকারের।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি বাগাতিপাড়ায় ইসতিসকার নামাজ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন : বাকৃবি অধ্যাপক বৃষ্টির জন্য হাকাকার, সাভারে ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল