২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মত প্রকাশের স্বাধীনতা

উন্মুক্ত না হলে এমন হত্যা আরো ঘটবে

-

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে নির্মমভাবে। তাকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাকে সরিয়ে দেয়ার ছক রীতিমতো ম্যাসেঞ্জারে প্রকাশ করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলো। গতকালের জাতীয় দৈনিকগুলোতে এই ষড়যন্ত্র ছকের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। আবরারকে হত্যা করা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশের জন্য। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ড ঘটত না যদি দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকত। এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সরকার ভিন্নমত সহ্য করছে না। ভিন্নমত প্রকাশের কারণে একটি মেধাবী ছাত্রকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে গোটা জাতি হতভম্ব ও উদ্বিগ্ন। সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন বুয়েটের ভিসি ও দলবাজ শিক্ষকদের নিয়েও। এদের চোখের সামনে বুয়েটের হলে হলে বছরের পর বছর ধরে চালু রয়েছে অসংখ্য টর্চার সেল, যেখানে ভিন্ন মতাবলম্বী শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাত ছাত্রলীগ। গণরুম বলে কথিত রুমগুলোতেও চলত একই ধরনের নির্যাতন। ছাত্রলীগের টর্চার সেলগুলোতে আবরারের মতো অনেক ভিন্ন মতাবলম্বী শিক্ষার্থী নানা মাত্রিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
বছরখানেক আগে দাইয়ান নাফিসকেও ছাত্রলীগের টর্চার সেলে যেতে হয়েছিল। শিবির আখ্যা দিয়ে দাইয়ানকেও বেধড়ক মারধর করেছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে আবরারের চেয়ে দাইয়ান ছিল তুলনামূলকভাবে ভাগ্যবান। কারণ দাইয়ানকে আবরারের মতো পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়নি। ভাগ্যবান দাইয়ানকে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। নিছক হলের খাবার নিয়ে ফেসবুকে রম্য লেখার কারণে আবরার হত্যার এক দিন আগে টর্চার সেলে ২০০৫ নম্বর রুমে ডাক পড়েছিল দাইয়ানের। সেখানে মধ্যরাতে তাকে মারধর করা হয়েছিল। এভাবে ভিন্নমত প্রকাশের কারণে কত শিক্ষার্থীকে যে ছাত্রলীগের টর্চার সেলে যেতে হয়েছে তা আমাদের অনেকেরই জানা।
এ দিকে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ যে এ দেশে আর অবশেষ নেই, তার আরো একটি উদাহরণ দেখা গেল সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের খবরে। খবরটি হচ্ছে, ভারতের সাথে যে চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে যখন প্রাণ দিতে হলো আবরার ফাহাদকে, ওই চুক্তি নিয়েই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: শেখ বাহারুল আলম। বুধবার খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জানা যায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সরকারপ্রধান, দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য ফেসবুকে দেয়া এবং তা একটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়। জানা যায়, ভারতের সাথে কী চুক্তি হয়েছে, তা জানার অধিকার এ দেশের জনগণের আছেÑ এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়াও তিনি আরো সুদীর্ঘ বক্তৃতা তুলে ধরেন ওই স্ট্যাটাসে।
আমরা মনে করি, এসব ঘটনা প্রমাণ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সরকার একদম সহ্য করতে পারছে না। সরকারের স্বার্থেই উচিত মত প্রকাশের স্বাধীনতা উন্মুক্ত করা। নইলে আবরার হত্যার ঘটনার মতো আরো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে। তা ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি সম্পর্কে জানার অধিকার এবং এ সম্পর্কে মত প্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই এ দেশের মানুষের আছে। এ জন্য কেউ প্রাণ দেবেন, কেউবা দল থেকে বহিষ্কার। তেমনটি নিশ্চয়ই কাম্য নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নেতাদের মুক্তির দাবিতে রিজভীর নেতৃত্বে নয়াপল্টনে বিএনপির মিছিল বৃষ্টির জন্য দেশবাসীর প্রতি ইস্তিস্কার নামাজ আদায়ের আহ্বান আমিরে জামায়াতের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর করল তুর্কি, ইরাক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ঢাকায় ‘হিট স্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট ‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’ বান্দরবানের ৩ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজে মুসুল্লিদের ঢল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা মনে হয় পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়েছে সরকার : রিজভী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীলের গুয়াংডংয়ে সর্বোচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান গ্রেফতার

সকল