২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ঢাকায় বায়ুদূষণ

সরকারের সদিচ্ছার জন্য আর কত অপেক্ষা

-

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণকবলিত পাঁচটি দেশের অন্যতম হলো বাংলাদেশ। বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করে ‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার’ নামের একটি সংস্থা। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ কোনো-না-কোনোভাবে বায়ুদূষণের মধ্যে বাস করছে। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে এক লাখ ২৩ হাজার মানুষ আর ভারত ও চীনে মারা যায় ১২ লাখের মতো।
দীর্ঘ দিন দূষিত বাতাসের মধ্যে থাকলে যেসব রোগ হতে পারে, তার মধ্যে আছে হৃদরোগ, কাশি, নিউমোনিয়াসহ ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমনÑ ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত নানা রোগ, স্ট্রোক, চোখে ছানি পড়া এবং শিশু ও গর্ভবতী নারীদের সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি প্রজন্ম যদি দীর্ঘ সময় বায়ুদূষণের মধ্যে কাটিয়ে দেয়, তাহলে মারাত্মক প্রভাব পড়ে পরবর্তী প্রজন্মের ওপর।
এ ক্ষেত্রে সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকার চিত্রও একই। বায়ুদূষণের কারণ যে ভারী ধাতু বা পার্টিকুলেট মেটার (পিএম-২.৫), ঢাকার বাতাসে তার অস্তিত্ব সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি। প্রধানত যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা, কলকারখানা থেকে ভারী ধাতু নির্গত হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ঢাকায় সাধারণত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বায়ুদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুসারে বাতাসে ভারী ধাতুর পরিমাণ ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত সহনীয়। এর বেশি হলেই তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গত সোমবার রাজধানীর একটি এলাকার বাতাসে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। বেশ কয়েক বছর আগেই পরিবেশ অধিদফতরের নির্ধারিত মানের চেয়ে ঢাকায় বায়ুদূষণ ছিল ১০ গুণ বেশি। এরপর পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়েছে, এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। পরিবেশ রক্ষায় দেশে তবু একটা আইন আছে। কিন্তু বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আজো কোনো আইন নেই। এমনই যখন বাস্তবতা, তখন ঢাকা শহরে বায়ুদূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দু’বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে চলতি বছরের শুরুর দিকে পরিবেশ অধিদফতরকে আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে, সেসব জায়গায় যাতে ধুলো ছড়িয়ে দূষণ বাড়াতে না পারে, সে জন্য জায়গাগুলো ঘিরে রাখা এবং ধুলোবালুপ্রবণ এলাকায় দিনে দু’বার করে পানি ছিটানোর নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। এর পর কিছু তৎপরতা দেখা গেছে পরিবেশ অধিদফতরের। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কিছু জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা হয়েছে, কিন্তু আইন প্রণীত হয়নি। রাজধানীতে পুরনো ইঞ্জিনের গাড়ি বন্ধ হয়নি; আশপাশের ইটভাটা বা কলকারখানা সরানোর ব্যবস্থাও হয়নি। পুরনো ইঞ্জিনবিশিষ্ট যান নিষিদ্ধ করতে কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই সুপারিশ করেছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া কম মাত্রার সালফারযুক্ত ডিজেল ব্যবহার, সব ধরনের পুরনো ইঞ্জিনের যানবাহন আমদানি নিষিদ্ধ করা এবং ইঞ্জিনে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছিল পরিবেশ অধিদফতর থেকে। এসবের কোনোটাই করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে খুব একটা মনোযোগ দিয়েছে বলে মনে হয় না।
রাজধানীর বায়ুদূষণ যে আগের মতোই রয়ে গেছে, সেটি বোঝা গেছে সোমবারের পরীক্ষাতেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণের কারণে ঢাকার নাগরিকদের মধ্যে ফুসফুসজনিত নানা রোগসহ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে। এ সমস্যা সমাধানে বায়ুদূষণের উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদেরা। সম্ভবত সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া দেশবাসীর তেমন কিছু করার নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি

সকল