২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ডিজিটাল প্রচার বাজারে রাজস্ব ফাঁকি

এনবিআরকে কঠোর হতে হবে

-

এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশের ডিজিটাল প্রচার বাজারে বড় অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন বাবদ ১০৪ কোটি ডলার বা আট হাজার ৭৪৪ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছে। সূত্রমতে, নিয়মানুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখান থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং অগ্রিম আয়করের ৪ শতাংশ পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে চলমান বিজ্ঞাপন থেকে ভ্যাটের উল্লেখযোগ্য অংশই পায় না। এ ছাড়া, নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হওয়ার তিন মাস পরও সরকার নিজের কর নেটওয়ার্কের আওতায় ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফরমকে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ গত ২৬ জুন রাজস্ব বোর্ড এ সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছিল যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ ইউটিউব ও গুগল ভ্যাট ছাড়া বাংলাদেশে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে এসব কোম্পানিকে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করতে হবে অথবা মূসক বা ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। আর এজেন্টরা ব্যবসায় পরিচালনাবাবদ বাংলাদেশ সরকারকে রাজস্ব প্রদান করবেন। এই বিজ্ঞপ্তির পর প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু নিবন্ধন বা এজেন্ট নিয়োগে কোনো অগ্রগতি নেই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, কম খরচে বিজ্ঞাপন প্রচারের উল্লেখযোগ্য একটি উপায় হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সময়ের সাথে এর সম্প্রসারণ ঘটছে দ্রুতগতিতে। সামাজিক গণমাধ্যম এখন খুবই জনপ্রিয়। সামাজিক গণমাধ্যমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাত্রাও বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রতি বছর ফেসবুক, ইউটিউব ও গুগল প্রায় এক হাজার কোটি টাকার মতো আয় করে বাংলাদেশ থেকে। পুরো খাতের আয় হিসাব করলে বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রচার বাজার দুই হাজার কোটি টাকা আয় করে। এর বেশি অর্থ চলে যাচ্ছে ব্যাংক চ্যানেল ছাড়াই দেশের বাইরে। এভাবে চলছে বড় অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফরমকে এনবিআর ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনতে পারলে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যর্থতা কিছুটা হলেও কমত। আমরা মনে করি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে রাজস্ব ফাঁকি বন্ধের উপায় উদ্ভাবন করতে হবে। পাশাপাশি, বিটিআরসিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কোনো ধরনের ভুল তথ্য দিলো কি না, তা নির্ণয় করতে হবে। নইলে এ খাতে রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করা কঠিন হবে। মনে রাখতে হবে, সামাজিক গণমাধ্যম রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস। তাই এ খাতের ব্যাপারে উদাসীন থাকার কোনো অবকাশ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement