২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
১১ জন অভিযুক্ত ভিসি

সুষ্ঠু তদন্ত করে পদক্ষেপ নিন

-

দীর্ঘ দিন ধরে ‘ক্ষমতার লেজুড়বৃত্তি’র দোষে অভিযুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) তথা সর্বোচ্চ পদটি। এ পদে যারা নিয়োগ পান, তারা সবাই সমসাময়িক সরকারের ঘোরতর সমর্থক। সরকারি দলের প্রতি শতভাগ আনুগত্য প্রদর্শন, জোরালো তদবির এবং সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক রাজনীতি এ পদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে গুরুত্ব পায়। ভিসি পদটি অতীব লাভজনক হওয়ায় তা বাগাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তদবির বা দৌড়ঝাঁপ দৃষ্টিকটুভাবে বেড়ে গেছে। সবাই যেন মরিয়া হয়ে ভিসি হতে চাচ্ছেন। আসলে ভাইস চ্যান্সেলর পদে কী কী ধরনের ক্ষমতা আছে? কিছু যে আছে, তা এই পদে আসীন শিক্ষকদের কর্মকাণ্ড এবং আকাক্সক্ষার মাত্রা মাপলেই বোঝা যাবে। এ কথা এখন সবার কাছে স্পষ্ট, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি হতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক যোগ্যতার তেমন দরকার হয় না। কিন্তু এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাপকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দলীয় শিক্ষক রাজনীতির সঙ্কীর্ণতাও কম দায়ী নয়। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে।
দেশের উচ্চশিক্ষার মানে ক্রমাবনতি দৃশ্যমান। এবার প্রকাশিত শিক্ষাবিষয়ক বৈশ্বিক মান নির্ণয় তালিকায় হাজারের মধ্যেও স্থান পায়নি ঢাকাসহ বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। এই একটি সূচকের দিকে তাকালেই আমাদের শিক্ষার মানের নিম্নগামিতার ভয়াবহ চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কারণ আর কিছুই নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিপুল বরাদ্দ, নিয়োগবাণিজ্য, নির্বিচারে ভর্তি ইত্যাদির প্রাধান্য। সেই বরাদ্দ থেকে ছাত্রনেতা এবং শিক্ষকেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিজেদের ‘হিস্যা’ পকেটস্থ করে বিপুল অর্থের মালিক বনে যাচ্ছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারের কমিশন-বাণিজ্য তার নগ্ন প্রমাণ। দেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জড়িয়ে পড়ছে নানাবিধ দুর্নীতিতে। আমাদের সমাজে যেনতেনভাবে অর্থ কামানোর উদগ্র বাসনা শিক্ষকসমাজকেও গ্রাস করেছে। এই প্রবণতা ইতোমধ্যে সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দেশে এখন সরকারি বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৯। শিক্ষাকার্যক্রম চলছে ৪৫টিতে। সংখ্যার হিসাবে এটা কম নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মজুরি কমিশন বা ইউজিসি সূত্র জানায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ১১ জন ভিসির বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এর পর প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে ইউজিসি। এই ১১ জন হলেনÑ টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর খোন্দকার নাসিরউদ্দিন, ঢাকাস্থ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এস এম ইমামুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর মো: আবদুস সাত্তার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এম অহিদুজ্জামান, ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মো: মতিয়ার রহমান হাওলাদার, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মু: আবুল কাশেম এবং রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমেদ। অভিযুক্ত ভিসিরা সবচেয়ে বেশি অনিয়ম করেছেন নিয়োগ নিয়ে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কোনো নিয়মই তারা মানতে চাইছেন না। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও নিয়োগ দিয়ে ‘বাণিজ্য’ করার অভিযোগ রয়েছে কয়েকজন ভিসির বিরুদ্ধে।
আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদের মতো একটি অতি উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদে বসে কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে, সে ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে উচ্চশিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আর ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষককে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসতে পারে শৃঙ্খলা।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান

সকল