২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলা

যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে হবে

-

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আবারো চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারের উত্তেজনার কারণ সৌদি আরবের দু’টি তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনা। সৌদি আরব ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরের ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করছে।
হামলায় সৌদি আরবের দু’টি বড় তেলক্ষেত্রে আগুন ধরে যায়। এর মধ্যে একটি তেলক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগারটি রয়েছে। দেশটির আরামকো বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি। বিশ্ববাজারে মোট তেল উৎপাদনের ১০ শতাংশের জোগানদাতা তারা। এই অগ্নিকাণ্ডে যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে দেশের দৈনিক তেল উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল কমে গেছে; যা বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের বিরাট অংশ। সরবরাহে ঘাটতি এবং যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে তেলের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে।
বলা হচ্ছে, হামলা চালানো হয়েছে ড্রোন বিমানের সাহায্যে। আর এই ড্রোন নাকি উড়ে এসেছিল ইরান থেকে। তবে হামলা ড্রোনের সাহায্যেই হয়েছে নাকি ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে, সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। আর এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের যুদ্ধরত হুতি বিদ্রোহীরা। কিন্তু ইরানের ওপর সব দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা ‘মোটামুটি নিশ্চিত’ হামলার পেছনে সরাসরি ইরানের হাত ছিল। এটা প্রমাণের জন্য তারা বিভিন্ন স্যাটেলাইট চিত্র এবং অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করেছে, তবে এগুলো অকাট্য নয়। বরং বিবিসির খবর অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞরা খতিয়ে দেখছেন ইরান কিংবা ইরাকে তাদের শিয়া মিত্রদের ছোড়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে হামলা ঘটেছে কি না।
এর আগেও নানাভাবে ইরানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার নানা অপকৌশল আমরা দেখেছি। তেল ট্যাংকারে হামলা বা মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা সবার মনে আছে।
তেহরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করার হুমকি দিলেও ইরান বলছে, এতে তারা আতঙ্কিত নয়। ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, তার দেশ কোনো মীমাংসাই করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়াশিংটন পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত না বদলায়। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সিদ্ধান্ত বদলায়, চুক্তি থেকে সরে যাওয়া নিয়ে অনুশোচনা করে চুক্তিতে ফিরে আসে; তাহলেই শুধু ইরানের সাথে তারা মীমাংসা করতে পারবে। তা না করলে কোনো পর্যায়ে, কোথাও কোনো কথাবার্তাই হবে না।’
অন্য দিকে, যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে ইরানকে নতি স্বীকারে বাধ্য করতে চায়। সর্বাত্মক অর্থনৈতিক অবরোধ এবং সর্বক্ষেত্রে মারাত্মক চাপে রাখার চেষ্টার পর ধীরে হলেও ইরান পরমাণু শক্তি অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের চরম উদ্বেগের বিষয়।
এরই মধ্যে উপসাগরে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ শুরু হয়েছে। রাশিয়া হুঁশিয়ার করেছে, কোনোভাবেই যাতে উপসাগরে আরেকটি যুদ্ধ বাধানো না হয়।
আমাদের বিশ্বাস, ইরানের বিরুদ্ধে বৈদেশিক হামলা শুরু হলে তা কেবল ইরান-মার্কিন সঙ্ঘাতে সীমিত থাকবে না; বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মার্কিন স্বার্থে হামলার সক্ষমতা প্রতিপক্ষের আছে বলেও ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়।
আমরা আশা করি, সব রকম বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকবে এবং স্থায়ী বিশ্বশান্তির পক্ষে সব কর্মপ্রয়াস নিয়োগ করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় সাহায্য বাড়াতে ইসরাইলকে নির্দেশ আইসিজের দিল্লি হাইকোর্টে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা খারিজ বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু দূষণে

সকল