২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিদ্যুৎকেন্দ্রে বছরে দিতে হয় ৮ হাজার কোটি টাকা

রাষ্ট্রীয় সম্পদের চরম অপচয়

-

বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অনেকগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এগুলোর বেশির ভাগই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেসরকারি খাতে। লক্ষ্য ছিল দেশের বিদ্যুৎচাহিদা পূরণ। কিন্তু এখন এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ চাহিদার অঙ্ককে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আমাদের দেশে রয়েছে ১২০টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এর মধ্যে ৮০টিই বেসরকারি খাতের। এগুলো নির্মাণ করা হয়েছে ২০০৯ সালের পর থেকে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা তোলা হয়েছে ১৭৮৪০ মেগাওয়াটে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে ভারত থেকে। সাধারণত পিক আওয়ার (সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা) পর্যন্ত প্রতিদিনের বিদ্যুৎচাহিদা ৯০০০ মেগাওয়াটের মতো। গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে এই চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০০ মেগাওয়াট। এ তথ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সূত্রের। অপর দিকে, শীতকালে এই চাহিদা নেমে আসে ৬০০০ মেগাওয়াটে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) প্রতিদিনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে রিপোর্ট এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়, সে অনুযায়ী জানা যায়, বাস্তবে কম চাহিদার কারণে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসে থাকে। যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের এ দশা, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো হিসাব পাওয়া যায় না বিউবো থেকে। তবে জানা যায়, পিডিবি মোটামুটি এর ৪০ শতাংশ খরচ করে এ খাতের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট হিসেবে। ক্যাপাসিটি পেমেন্ট হচ্ছে সে পরিমাণ অর্থ, যা সরকার পরিশোধ করে ‘বসে থাকা’ অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে। চাহিদা না থাকার কারণে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদন বন্ধ রেখে বসে থাকতে হয়।
এ কারণে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যে ২১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এর মধ্যে আট হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট খাতে। এই তথ্য পিডিবি সূত্রের। এখন নগদ অর্থের ফাঁদে আটকা পড়া পিডিবিকে বছরে আট হাজার কোটি টাকা ঘাটতি নিয়েই চলতে হচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর পিডিবিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করতে হয়েছে। দেশের খ্যাতনামা জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এম শামসুল আলম একটি দৈনিককে বলেছেন, বিদ্যুৎ খাত বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যদিও বিগত পাঁচ বছরে আমাদের বিদ্যুৎচাহিদার প্রবৃদ্ধি বছরে ১২ শতাংশ, কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ।
আসলে আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উন্নয়নে ভুল পথ অনুসরণ করা হচ্ছে। বিগত ১০ বছরে সরকারি খাতের তুলনায় বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি অধিক গতিতে বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ে যখন সরকারি খাতে উৎপাদন বেড়েছে ৬৫৩৬ মেগাওয়াট, সেখানে বেসরকারি খাতে বেড়েছে ৭৮৫৩ মেগাওয়াট। তা সত্ত্বেও বেসরকারি খাতে ৩২টি ও সরকারি খাতের ১৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অলস বসে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি পেমেন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনার কার্যকর উপায় বের করতে হবে। পিডিবিকে ঘাটতি থেকে বের করে আনার বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা গাজার বালিতে আটকে পড়েছে ইসরাইলি বাহিনী : হামাস মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন : যা বলছে আওয়ামী লীগ মান্দায় বিদ্যুতের আগুনে পুড়ল ৮ বসতবাড়ি রিজওয়ানকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্র্যাডম্যান বললেন আফ্রিদি গোবিন্দগঞ্জে ট্রাক্টরচাপায় নারী নিহত অভিযোগ করার পর ইনসুলিন ইঞ্জেকশন কেজরিওয়ালকে! হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা তালায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩টি পরিবারের মাঝে জামায়াতের সহায়তা প্রদান শেরপুরের মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ বেনজীরের সম্পদ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন চাইলেন হাইকোর্ট

সকল