২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
চার মাসে বন্ধ ৩৫ পোশাক কারখানা

বাড়াতে হবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা

-

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস তৈরী পোশাক খাত। কয়েক দশক ধরে আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এ খাতের ভূমিকা অপরিসীম। এ দেশে সস্তায় পোশাক শ্রমিক পাওয়াসহ আরো কিছু স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা আমাদের জন্য এ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ফলে আমরা এ ক্ষেত্রে হয়েছি অন্যান্য দেশের তুলনায় অধিকতর প্রতিযোগিতায় সক্ষম। কিন্তু আমরা ক্রমেই যেন এই সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি। অর্থাৎ তৈরী পোশাক খাত একধরনের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এর জের ধরে একে একে পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার পথে এগোচ্ছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর মতেÑ গত চার মাসে দেশের ৩৫টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিবেশী প্রতিযোগী দেশের সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় দেশের কারখানাগুলোর ক্রয়-আদেশ কমে যাওয়াই এসব কারখানা বন্ধ হওয়ার বড় কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া এর পেছনে নতুন কাঠামোতে বেতন পরিশোধের চাপ, শ্রমিক বিক্ষোভ এবং শেয়ার্ড বিল্ডিং ব্যবহারের মতো কারণও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও কারখানা মালিকেরা জানিয়েছেন, প্রতি মাসেই কোনো-না-কোনো কারখানা বন্ধের ঘটনা ঘটছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার। এ দুর্ঘটনার পর এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তিন হাজারের চেয়ে কিছু বেশি।
গত মে মাসে কারখানা বন্ধ হওয়ার এ গতি বেড়ে গেছে। গত মে মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত চার মাসে ৩৫টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে চাকরি হারিয়েছেন ১৬ হাজার ৮৪৯ জন শ্রমিক। গত রমজান মাসে আরো বন্ধ হয় ২০-২৫টি কারখানা। এর মধ্যে দুই ঈদের মধ্যবর্তী সময়ে বন্ধ হয়েছে ১৫ থেকে ২০টি কারখানা।
জানা গেছে, কারখানা বন্ধের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারার সৃষ্টি হয়েছে। আগে পুরো কারখানা বন্ধ করা হলেও এখন দেখা যাচ্ছে ১৫ লাইনের কারখানার ক্ষেত্রে দুই বা তিন লাইন বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, এতে বেকার হচ্ছেন ২০০ থেকে ৩০০ শ্রমিক।
বিজিএমইএ কর্মকর্তারা বলছেন, সামগ্রিক পোশাক খাতের অবস্থা ভালো নয়। ক্রয়-আদেশ কমে গেছে। কিছু নতুন প্রতিযোগী দেশেও তৈরি হচ্ছে। এর ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না অনেক কারখানা। তা ছাড়া ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াও একটা সমস্যা।
সার্বিকভাবে, দেশের তৈরী পোশাক কারখানা এখন অস্তিত্ব সঙ্কটের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের উচিতÑ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এমন পদক্ষেপ নেয়া, যাতে আমাদের পোশাক কারখানাগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ে এবং কারখানাগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল