এর উৎপাদন বাড়ানো দরকার
- ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
দেশের গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য হচ্ছে ঘাস। এই ঘাস উৎপাদনের জন্য জমি থাকা দরকার। কিন্তু সময়ের সাথে ফসলি জমি যেমন কমছে, তেমনি ঘাস উৎপাদনের মতো জমির পরিমাণ কমছে। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে জমিতে ঘাস উৎপাদনের পরিমাণও কমছে। এখন আমরা গবাদি পশুকে পরিমাণে ঘাসের বদলে নানা ধরনের শুকনো খাবার দিচ্ছি ক্রমবর্ধমানহারে। তবে এগুলোর খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই এর বিকল্প অনুসন্ধানও চলছে নানাভাবে।
এ ক্ষেত্রে একটি সাফল্য হচ্ছে, মাটিহীন ঘাস চাষ। মাটি ছাড়া ‘হাইড্রোপনিক’ পদ্ধতিতে উৎপাদিত ঘাস গবাদি পশুর নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করছে। আবার এই ঘাস খেয়ে পশুর দুধ উৎপাদনও বাড়ছে। অনেক খামারি এ পদ্ধতিতে ঘাস উৎপাদন করে অধিকতর লাভবান হচ্ছেন।
একটি জাতীয় পত্রিকায় জানানো হয়েছে, রাজধানীর কল্যাণপুরের এক খামারি মাটি ছাড়াই এই পদ্ধতিতে ঘাস উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি তার খামারে বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করেছেন, সে মাচার ওপর স্তরে স্তরে ৩২টি ট্রে সারি বেঁধে রাখা হয়েছে। ট্রেগুলোতে সামান্য মাটিও নেই। অথচ প্রতিটি ট্রে থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৯ কেজি ঘাস। কীটনাশক ও পরজীবীমুক্ত সে ঘাসেই খামারের গবাদি পশুর নিরাপদ খাদ্য যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি দুধ উৎপাদনের পরিমাণও বেড়েছে। তার খামারের ২২টি গাভীকে তিনি এই ঘাস খাওয়াচ্ছেন।
জানা যায়, গবাদি পশুকে হাইড্রোপনিক ঘাস খাওয়ানোর পর থেকে এ খামারের দুধ উৎপাদন বেড়েছে অন্তত ১৫ শতাংশ। আগে যে গাভী থেকে ১০ লিটার দুধ মিলত, এখন সেই গাভী দিনে ১২ লিটার পর্যন্ত দুধ দিচ্ছে। পশুর কৃত্রিম প্রজনন ক্ষমতাও বেড়েছে। ভালোমানের ঘাস পেতে ভালো মানের ভুট্টার বীজ ব্যবহারের প্রয়োজন।
খামারিরা জানিয়েছেন, খড়, চিটাগুড় ও ইস্টমিশ্রিত গবাদি পশুর খাবার সাইলেজের দাম পড়ে কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা। গবাদি পশু অনেক সময় মোটাতাজা করতে এই খাবারের সাথে খামারিরা ক্ষতিকর হরমোন ও স্টেরয়েড মিশিয়ে থাকেন। অথচ হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে প্রতি কেজি মাটিহীন ঘাসের উৎপাদন খরচ পড়ছে নন-এসি পদ্ধতিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা এবং এসি পদ্ধতিতে ৫ থেকে ৬ টাকা। গবাদি পশুর খাবার হিসেবে হাইড্রোপনিক ঘাস খুবই উপকারী বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল হক বেগ। তিনি জানিয়েছেন, কীটনাশক, কৃমি ও পরজীবীমুক্ত উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ হাইড্রোপনিক ঘাস খেয়ে গবাদি পশু ভালো মানের দুধ দেয়। বাজারে পাওয়া গরুর খাবার বা ঘাসে অনেক সময় কীটনাশক ও পোকামাকড় থাকে। তাতে পশুর পুষ্টি এবং দুধের উৎপাদনও কম হয়। কিন্তু হাইড্রোপনিক ঘাস খনিজ পদার্থ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ। একই সাথে, ফাঙ্গাস ও ছত্রাকমুক্ত।
আমরা মনে করি, বাংলাদেশে মাটিহীন এই ঘাসের চাষ ব্যাপকভাবে বাড়ানো দরকার। এ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণাসহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মীদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার। খামারিরা এই পদ্ধতিতে ঘাস উৎপাদন করে লাভবান হতে পারেন বলে আশা করা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা