২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ঢাকায় চার গুণ হাসিল আদায়

পানির দরে কোরবানির পশুর হাট ইজারা

-

আগামী ১২ আগস্ট বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এই ঈদে পশু কোরবানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুলিম উম্মাহর এ উৎসবে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমান কোরবানি দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় কোরবানির ঈদে দেশে বিপুল পশু বেচাকেনা হয়। আশা করা হচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যেই জমে উঠবে পশুর হাটগুলো। দেশে কোরবানির পশুকেন্দ্রিক অর্থনীতির পরিসর দিন দিন বাড়ছে। পশু লালন-পালন করে কোরবানির সময় তা বিক্রির জন্য বিপুল খামারি রাজধানীসহ দেশের অস্থায়ী হাটগুলোতে নিয়ে আসেন। ফলে পশুর হাটগুলো ইজারা নেয়া এখন অত্যধিক লাভজনক একটি বিষয়। এ কারণে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা নিতে প্রতি বছরই ক্ষমতাসীন দলীয় নেতাকর্মীরা মরিয়া হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক মদদ না থাকলে সাধারণত এসব হাট ইজারা পাওয়া যায় না। একটি প্রবণতা লক্ষণীয়। তাহলোÑ যেহেতু এসব হাট রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ইজারা নিয়ে থাকেন; সে জন্য আইনের ফাঁকে পানির দরে তাদের দেয়া হয়। বিশেষ করে রাজধানীর কোরবানির সব অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে থাকেন ইজারাদাররা। আর হাটগুলোর তত্ত্বাবধানে থাকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর অস্থায়ী কোরবানির হাটগুলো প্রায় প্রতি বছরই খুব অল্প দরে ইজারা দেয় দুই সিটি করপোরেশন। আইনের মারপ্যাঁচ, প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডার না হওয়া এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের খুশি রাখার কারণে প্রতি বছর বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে সংস্থা দু’টি। গত তিন বছরে এসব হাট থেকে দুই সিটি ইজারামূল্য পেয়েছে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। আর ক্রেতাদের কাছ থেকে ইজারাদাররা হাসিল বাবদ আদায় করেছেন প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা, যা ইজারামূল্যের চারগুণেরও বেশি।
এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ২৩টি হাটের ইজারমূল্য বাবদ রাজস্ব পেয়েছে ২২ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার টাকা। এসব হাট থেকে ৮৬ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা হাসিল আদায় হতে পারে। এসব হাটে এবার প্রায় তিন লাখ ২৬ হাজার ৯৩৬টি গরু-ছাগল বিক্রির সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে গরু প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার ১৪৫টি। এখান থেকে ইজারাদাররা ৮৪ কোটি চার লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাসিল আদায় করতে পারবেন। ছাগল বিক্রি হবে ৪৬ হাজার ৭৯১টি। ছাগল বিক্রি বাবদ দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা হাসিল আদায় হতে পারে।
আমরা মনে করি, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিরা আরো সক্রিয় হলে পশুর হাট ইজারা দিয়ে অনেক বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের সুবিধা করে দিতে গিয়ে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এই মানসিকতা থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে টেন্ডার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে হবে হাট ইজারা।


আরো সংবাদ



premium cement