২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি

এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে

-

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির উপর্যুপরি ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনায় রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় নিহত হয়েছেন চারজন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। সাম্প্রতিক সময়ে ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে পদ্মা সেতুতে নরবলি দিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে স্পষ্ট করে, এ ধরনের নরবলির কোনো ঘটনা ঘটছে না। অন্য ব্যাপারটি হচ্ছে, অপহরণের ঘটনা। প্রকাশ্যে অনেকের মাঝ থেকে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এতে দেশে একটি আতঙ্কজনক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। এ কারণে গণপিটুনির ঘটনা একের পর এক ঘটছে। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। দুঃখজনক হচ্ছে, ঘটনার সত্যাসত্য যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয় না।
রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে নিহত হয় তসলিমা বেগম নামে এক নারী। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের এই নারী চার বছর বয়সী এক মেয়ে নিয়ে মহাখালীর ওয়্যারলেসে থাকেন। দুই বছর আগে স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়ের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে যান তিনি। এ সময় তার কথাবার্তায় অসঙ্গতির কারণে তাকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে নেয়া হয়। এরই মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এক ছেলেধরা আটক হয়েছে। পরে স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ওই নারীকে গণপিটুনি দেয়। এই গণপিটুনির বর্ণনা দিয়ে একটি সংবাদপত্র লিখেছে, চুলের মুঠি ধরে এক নারীর মাথা দেয়ালে ঠুকছেন কয়েকজন। মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এরপরও চলতে থাকে উপর্যুপরি লাথি-ঘুষি। কয়েকজন তরুণ লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করেন। একজন মানুষ অপরাধী কি না, সেটা নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না উত্তেজিত জনতা। একই ধরনের ঘটনা কেরানীগঞ্জেও ঘটে। সেখানে দুই যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয়। তাদের গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। তাদের একজন মারা যায়। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক শিশুকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এক যুবক। তাকে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এ ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর এক নারীকে ঘুরতে দেখে পিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরে দেখা যায়, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। সাভারেও ছেলেধরা সন্দেহে আরেক নারীকে পেটানো হয়, পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে একই ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেধরা সন্দেহে নারী-পুরুষ গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে নারীদের ওপর ছেলেধরা সন্দেহে পিটুনির নতুন হুজুগ দেখা যাচ্ছে। অনেক নিরপরাধ মানুষ এর শিকার হতে পারেন।
গণপিটুনিতে নির্দোষ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বিভাগ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তারা বলেছে, গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যা বড় অপরাধ। বাস্তবে ছেলেধরা আতঙ্ক আরো ছড়িয়ে পড়ছে। এর সাথে মানুষের মধ্যে থাকা আগের অপহরণের আতঙ্কও যোগ হচ্ছে। আইনের শাসনের অবনতির ব্যাপারে সমাজে ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তারা আইন নিজ হাতে তুলে তাৎক্ষণিক অপরাধের অপনোদন করতে চায়। যদিও কোনোভাবে একটি সভ্য সমাজে এমন হওয়ার কথা নয়। আমরা মনে করি, আইনের শাসন বিষয়ে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। জনতার উত্তেজিত হত্যাকাণ্ডকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। এভাবে মানুষ হত্যা মর্মান্তিক, যা মেনে নেয়া যায় না।


আরো সংবাদ



premium cement
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ সখীপুরে সাবেক ও বর্তমান এমপির সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অন্যতম দায়ী : মির্জা আব্বাস সৈয়দপুরে জামায়াতের উদ্যোগে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না থাকার কারণ জানালেন সাকিব ঝালকাঠিতে গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল চুয়াডাঙ্গায় বাতাসে আগুনের হল্কা : গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ বৃষ্টির নামাজ আদায়ের নিয়ম আজও স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৮ এপ্রিল খুলে দেয়ার প্রস্তুতি, ক্লাস চলবে শনিবারও মিরসরাইয়ে জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, মূল হোতা গ্রেফতার

সকল