২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বন্যার পাশাপাশি ভাঙনের আতঙ্ক

জরুরি ভিত্তিতে ঠেকাতে হবে

-

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে কয়েক দিন ধরে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও মানুষ রয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে। লাখ লাখ পানিবন্দী মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন বানভাসি অভাবী দুর্গতরা। এখনো অনেকে বাস করছেন ঘরের চালে। ত্রাণবাহী কোনো নৌকা দেখলেই মানুষ ছুটে যাচ্ছে সেখানে। কিন্তু প্রশাসন যে ত্রাণ বিতরণ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ দিকে বন্যাকবলিত মানুষ এখন ভুগছে নদীভাঙনের আতঙ্কে।
খবরে প্রকাশ, সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ খবরে শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে এই বাঁধ ভেঙে শহর ও শহরতলির গ্রামগুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়তে পারে। এ ছাড়া নদীতীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, পাবনা, গাইবান্ধা, বগুড়া, নওগাঁ, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, নেত্রকোনা, সিলেট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জসহ অনেক জেলার মানুষ এখন ভাঙনের আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। এ দিকে দুই দিন ধরে হু হু করে বাড়ছে পদ্মার পানি। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও ফরিদপুর জেলার মানুষের মধ্যেও।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে, চলতি বন্যায় সারা দেশে ৩০ জেলার ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। ২৮০ কিলোমিটার বাঁধ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ৩২০টি পয়েন্ট। এ ছাড়া সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা প্রভৃতি জেলায় তিন হাজার কিলোমিটার বাঁধ পানির নিচে ডুবে গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, সারা দেশেই বন্যার কারণে বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় ব্রিজ এবং বেড়িবাঁধ ভেঙে বহু গ্রাম প্লাবিত। তবে যেসব পয়েন্টে বাঁধ ভাঙার হুমকি দেখা দিয়েছে, সেগুলো মেরামত করলে অনেক বাঁধের ভাঙন ঠেকানো সম্ভব। সেই সাথে অনেক এলাকা বাঁচানো যাবে নতুন করে বন্যার কবল থেকে। তাই ভাঙন ঠেকানোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের এই সময়ে বিশেষ নজর দেয়া দরকার। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এ ব্যাপারে জরুরি উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তা ছাড়া, বন্যার পানি নেমে গেলে যথাসম্ভব দ্রুত, ভেঙে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কাজে নামতে হবে। এ জন্য এখন থেকে করণীয় নির্দেশ করতে হবে। তা ছাড়া, বন্যায় এরই মধ্যে কয়েক জেলায় যেসব গ্রাম ভাঙনের শিকারে পরিণত হয়েছে, সেসব গ্রামের মানুষের পুনর্বাসনের বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বন্যার সাধারণ পুনর্বাসন কর্মসূচির বাইরে নদী ও বাঁধভাঙনে করণীয় নির্ধারণে আলাদা পুনর্বাসন কর্মসূচি দরকার।

 


আরো সংবাদ



premium cement