১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সঙ্কট

বরাদ্দ বাড়াতে হবে অবিলম্বে

-

বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল শিক্ষা প্রদান বা জ্ঞানচর্চার জন্য নয়, সেই সাথে গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করাও এর একটি প্রধান লক্ষ্য। অথচ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমনকি সরকার নিয়ন্ত্রিত পাবলিক ইউনিভার্সিটিতেও গবেষণা হচ্ছে নামে মাত্র। অত্যন্ত অপ্রতুল বরাদ্দ, উপযুক্ত লোকবল না থাকা, সরকারের অনাগ্রহ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা প্রভৃতি কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।
একটি সহযোগী দৈনিকের লিড নিউজে এ প্রসঙ্গে জানানো হয়, মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে দেশের পাবলিক ভার্সিটিগুলো ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে এক-চতুর্থাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার গবেষণাই করা হয় না। আর ‘গবেষণা’র নামে যা হচ্ছে, তার উপযুক্ত মান না থাকায় ৯০ শতাংশেরও বেশি গবেষণাকর্ম আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ করা যায় না। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার জন্য সামান্য আর্থিক বরাদ্দ পেয়ে থাকে। আরো দুঃখজনক হলো, এ খাতে যতটুকু অর্থ পাওয়া যায়, তা-ও অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় করা হয় না। অথচ মৌলিক জ্ঞান-গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে এর প্রকাশনা কমে যাওয়ায় আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থা বৈশ্বিক পরিসরে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে অনেকখানি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গবেষণা প্রকল্পের কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব, অপর্যাপ্ত বরাদ্দ, মানসম্মত গবেষণাগার না থাকা, গবেষণা উন্নতমানের হলেও স্বীকৃতি না পাওয়া, পদোন্নতির সময়ে গবেষণার চেয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রাধান্য লাভ করা প্রভৃতি কারণে মেধাবী শিক্ষকেরা গবেষণায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিছক সনদ বিলির প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত হচ্ছে। যেখানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাকর্মের এই অবস্থা, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুরবস্থা সহজেই অনুমেয়। এ ধরনের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে কোনো গবেষণা কার্যক্রমই নেই। অন্যরা দায়সারাভাবে কিছু অর্থ গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখেন, যা কার্যত না রাখার শামিল।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুন্নয়ন খাতের জন্য বরাদ্দ ছিল চার হাজার ১৫১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ৩৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাবাবদ বরাদ্দ ছিল মাত্র ৬১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অনুন্নয়ন ব্যয়ের তুলনায় এর পরিমাণ মাত্র ১.৪৮ শতাংশ। পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে, তা ১.২৯ শতাংশে নেমে এসেছে। আর চলতি ২০১৯-২০ সালে এই হার আরো কমে গেছে। এ বছর ৪৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুন্নয়ন খাতের বাজেট পাঁচ হাজার ৮৯ কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে গবেষণার বরাদ্দ। পরিমাণ ৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা অনুন্নয়ন ব্যয়ের মাত্র ১.২৬ শতাংশ। ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ হিসেবে একদা অভিহিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৭-১৮ সালে গবেষণা খাতে পেয়েছিল ১৪ কোটি টাকা। অথচ পুরো বছরেও আট কোটি ৪২ লাখ টাকার বেশি খরচ করতে পারেনি। অর্থাৎ, গবেষণাকর্ম ছিল নিতান্ত অপর্যাপ্ত। তাই পরের বছর থেকে দেশের এই বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বরাদ্দ কমিয়ে ৯ কোটি টাকা করা হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা খাতে এক কোটি টাকা দেয়া হলেও পুরো টাকাই অব্যয়িত থেকে গেছে। ঢাবির একজন সাবেক ভিসি বলেছেন, ‘গবেষণা না থাকলে বিদ্যালয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভেদ থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানের ক্ষেত্রে তিনটি দায়িত্ব পালন করতে হয়Ñ ক. গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি; খ. সেই জ্ঞানকে প্রকাশনার মাধ্যমে সংরক্ষণ এবং গ. পাঠদানের মাধ্যমে জ্ঞান বিতরণ। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু পুরনো জ্ঞান বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু নতুন নতুন জ্ঞান আবিষ্কার হচ্ছে না।’
আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাতে সত্যিকারভাবে জ্ঞান গবেষণার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, এ জন্য পর্যাপ্ত অর্থবরাদ্দসহ যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকেই পালন করতে হবে অগ্রণী ভূমিকা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত

সকল