২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডিসি সম্মেলনে ৩৩৩ প্রস্তাব

সর্বময় ক্ষমতা চান ডিসি-ইউএনওরা

-

এমনটি বলা ভুল হবে না যে, সামান্য কিছু দায়িত্ব ও ক্ষমতার বাইরে জেলা-উপজেলা ডিসি ও ইউএনওরা প্রায় সব ক্ষমতাই ভোগ করেন। এরপরও তারা চাইছেন আরো ক্ষমতার অধিকারী হতে। জেলা-উপজেলায় ‘সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী’ হতে চান বলেই মনে হচ্ছে। অবাক করা ব্যাপার হলো, তারা এবার ডিসি সম্মেলনে যেসব দাবি-প্রস্তাব উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন, তাতে সংবিধানের সাথে সঙ্ঘাত সৃষ্টি করেÑ এমন প্রস্তাবও রয়েছে। আজ ঢাকায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেজন্য ৬৪ জেলার ডিসিরা এখন ঢাকায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্মেলনের জন্য প্রণীত কার্যপত্রের ৩৩৩টি প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে একটি জাতীয় দৈনিক বলেছে, এর মধ্যে অন্তত ১৫টি প্রস্তাব রয়েছে, যেগুলো অন্যান্য দফতরের এখতিয়ারভুক্ত। সেগুলোও নিয়ন্ত্রণ করতে প্রস্তাব করা হয়েছে ডিসিদের পক্ষ থেকে। ডিসিরা চাচ্ছেন তাদের হাতে থাকা বিপুল ক্ষমতা আরো নিরঙ্কুশ করতে। প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শুধু জেলা-উপজেলা নয়, ডিসিদের নজর পড়েছে স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে নিচের স্তর ইউনিয়ন পরিষদেও। ইউপি চেয়ারম্যানদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোনো কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেরি হলে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করার ক্ষমতাও চান ডিসিরা। এ ছাড়া জেলায় এসপির বাইরে আলাদা পুলিশ বাহিনীকে উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অধীনে আনার প্রস্তাব করেছেন তারা। সেই সাথে জেলা-উপজেলার আয়কর আদায়, ফৌজদারি অপরাধ বিচারের ক্ষমতা, কোটি টাকার থোক বরাদ্দ, এনজিও-কার্যক্রম তদারকি, ডিপিপি প্রণয়ন, মোবাইল কোর্টের অধীনে নতুন নতুন আইন অন্তর্ভুক্তকরণ, জেলা মাদকপণ্য নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে ডিসিকে সভাপতি করা এবং উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে ইউএনওদের সভাপতি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব অনেক প্রস্তাবই অন্য দফতরের এখতিয়ারভুক্ত থাকায় তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তা ছাড়া, ফৌজদারি অপরাধের ক্ষমতা পুরোপুরি বিচার বিভাগের অধীনস্থ একটি বিষয়। এই অধিকার কী করে ডিসিদের হাতে দেয়া যেতে পারে, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। এর বাইরে প্রশাসন ক্যাডারদের জন্য নতুন ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও তুলেছেন তারা। এ ধরনের দাবি তোলার পেছনে সরকারের অবলম্বিত নীতিই দায়ী। ডিসিরা দেখছেন সেনাবাহিনীর লোকদের ট্রাস্ট ব্যাংক, আনসার ভিডিপির জন্য আলাদা ব্যাংক, বিজিবির জন্য সীমান্ত ব্যাংক করতে দিয়েছে সরকার। এভাবে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের লোকদের জন্য আলাদা আলাদা ব্যাংক খোলার অনুমতি দেয়া কতটুকু উচিত, সে প্রশ্নও আসে। ডিসিদের নিরাপত্তায় এক প্লাটুন পুলিশ বাহিনী দেয়ার প্রস্তাবও করা হচ্ছে ডিসি সম্মেলনে। এভাবে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা আলাদা পুলিশ বাহিনী গঠন করার দাবির পেছনে কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না। ডিসিদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা পুলিশ বাহিনী গঠন করতে দিলে, হয়তো আর কিছু দিন পর প্রশাসনের অন্য কোনো অংশও নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা পুলিশ বাহিনী গঠনের দাবি নিয়ে হাজির হতে পারে।
এভাবে ডিসি ও ইউএনওদের হাতে যেসব ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে উল্লিখিত ৩৩৩টি প্রস্তাবে, তা পাঠে মনে হয় জেলা-উপজেলার ‘সর্বেসর্বা’ হয়ে উঠতে চান ডিসি-ইউএনওরা, যা কার্যত ক্ষমতার ভারসাম্যকেই বিনষ্ট করবে। তাই আমরা মনে করি, প্রস্তাবগুলোর খুঁটিনাটি বিবেচনা করে দেখতে হবে। এমন কোনো প্রস্তাব যেন গৃহীত না হয়, যা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। আবার সরকারের বিভিন্ন বিভাগের এখতিয়ার নিয়ে নতুন করে কোনো দ্বন্দ্বের সৃষ্টি যেন না হয়। আমরা চাই, দাবিগুলো সার্বিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হোক।


আরো সংবাদ



premium cement
আদমদীঘিতে ২৩০ চালকল বন্ধ : বেকার ৭ হাজার শ্রমিক সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশের লক্ষ্য সিরিজে সমতা কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী

সকল