বর্ষাতেও কোথাও বৃষ্টি, কোথাও অনাবৃষ্টি
- ১০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বাংলাদেশে লক্ষণীয়। এ কারণে দেশে এক অঞ্চলে বৃষ্টি আবার একই সময়ে কোথাও অনাবৃষ্টি দেখা যাচ্ছে। অথচ এখন চলছে পুরোদস্তুর বর্ষাকাল। মওসুমি বায়ুর প্রভাবে এ সময়ে বাংলাদেশের সব অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ার কথা। অথচ দেখা গেল, চট্টগ্রামে গত সোমবার ভারী বৃষ্টিপাতে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোসহ অনেক জায়গা তলিয়ে গেছে। বহু সড়কে ছিল থইথই পানি। নগরবাসীকে পোহাতে হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। তদুপরি ভারী বর্ষণে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ধসে কাপ্তাইয়ে গত সোমবার দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অন্য দিকে, দেশের উত্তরাঞ্চলে, অন্যতম শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত চলনবিল চলতি বর্ষাতেও অনাবৃষ্টির কারণে পানিশূন্য। ফলে সেখানে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্বের অনেক দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রকৃতিকে খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করায় সর্বত্র এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয়। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশে মরুকরণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর প্রধান লক্ষণÑ বিস্তৃত এলাকাজুড়ে সেখানকার মাটি অনুর্বর হতে থাকা, নদী-নালা ও খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়া এবং বৃষ্টির অভাব। কয়েক দশক ধরে এসব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে। মাটি অনুর্বর হওয়ার সাথে সাথে দেশের জলাধার বিপন্ন হচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও যথেচ্ছ পানি উত্তোলনের কারণে জলাভূমি শুকিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষিজমি সংরক্ষণ এবং কৃষিকাজে জৈবসার ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিতকরণে প্রচার, অপরিকল্পিত নগরায়ন নিষিদ্ধ করা, নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা এবং জলাভূমি সংরক্ষণে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।
পরিকল্পনার অভাবে নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদী হারিয়ে যাচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধ এবং তিস্তাসহ ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃনদীগুলোর পানিপ্রবাহ রোধ দেশের নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার বড় কারণ। এ দিকে রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি এবং পরিকল্পনা না থাকায় দেশের জলাভূমিগুলো শুকিয়ে হচ্ছে।
বৈশ্বিক কারণ ছাড়াও মানুষের অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রের উদাসীনতায় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কৃষিজমিসহ সব ভূমির উপরের স্তরে বালির পরিমাণ বাড়ছে। নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন, জলাভূমি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে চাষাবাদের প্রকৃতির স্বাভাবিকতা নষ্ট হচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ করে আমরা জমির উর্বরতার পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছি। দীর্ঘ দিন আমরা বনসম্পদ যেভাবে অবিবেচকের মতো উজাড় করছি, তার কুফল এখন ভোগ করতে হচ্ছে। বন উজাড় দেশে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে এবং জমির অনুর্বরতা ঠেকাতে জৈব চাষের প্রতি কৃষকদের উৎসাহিত করা উচিত। জলাভূমি রক্ষা, নদীর প্রবাহ ঠিক রাখতে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করা এবং উপযোগী কৃষিকাজ ও সার ব্যবহারে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা