২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
নির্যাতন বাড়ছে রোহিঙ্গাদের ওপর

১০ লাখ শরণার্থীর চাপে বাংলাদেশ

-

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইস্যুর সংশ্লিষ্ট দেশ চীন সফর করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ দেশটির সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কয়েক বিলিয়ন ডলারের। অর্থনৈতিক স্বার্থকে ছাড়িয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি এবার আলোচনায় প্রাধান্য পাওয়ায় বোঝা যায়, বাংলাদেশ এই সঙ্কটে কত বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এই সঙ্কট সমাধানে সাহায্য করার বিষয়ে চীনের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। অপ্রিয় বাস্তবতা হচ্ছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট সুরাহার এখনো কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। এর মধ্যে মিয়ানমারে থেকে যাওয়া বাকি রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে। যেভাবে মিয়ানমার সরকার চলছে তাতে বোঝা যায়, এই সঙ্কট মেটাতে দেশটি কোনো চাপ অনুভব করছে না।
রোহিঙ্গাদের গণহত্যা বিষয়ে তদন্তে নিয়োজিত জাতিসঙ্ঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য ক্রিস্টোফার সিদোতি রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ওপর একটি বিশেষ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাখাইন প্রদেশে বিভিন্ন বন্দিশিবির ও পাড়ায় রোহিঙ্গাদের ওপর আজো নাৎসি কায়দায় নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে ইহুদিদের ওপর নাৎসি বাহিনী যেভাবে নির্যাতন চালিয়েছিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর তেমন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নির্ধারিত স্থান ছাড়া তারা কোথাও যেতে পারে না। জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না, শিশুরা যেতে পারছে না স্কুলে। এমনকি, হাসপাতালে যেতে ছয়টি প্রশাসনিক বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হয়। রোহিঙ্গারা বিয়ে করা ও সন্তান জন্মদানের মানবিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কমে চার-পাঁচ লাখে নেমে এসেছে। সিদোতি যখন ভয়াবহ প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন, তখন মিয়ানমারের ওপর এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ নেই বলা চলে। বরং বিশ্বশক্তি চীন ও রাশিয়া সরাসরি নিপীড়ক দেশটির পক্ষ নিয়েছে। অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক স্বার্থ বিবেচনায় ভারতও মানবতা বিসর্জন দিয়ে, রয়েছে মিয়ানমারের সাথেই। ইউরোপ ও আমেরিকাও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
কোনো সরকার যদি হিটলারের কায়দায় কোনো জাতিগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন চালায়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বের সব সভ্য দেশ দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগ করাই দায়িত্ব। তখন দেশটি নিশ্চয়ই তার অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে। সেখানে মিয়ানমার কিভাবে নিশ্চিন্ত থেকে এমন জঘন্য অত্যাচার করে চলেছে, একটি জাতিগোষ্ঠীর ওপর বিরাট প্রশ্ন সেটি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে চীনের সাথে ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করলেও কার্যত চীনের অবস্থান কতটা পরিবর্তন হবে, সেটি নিশ্চিত নয়। তারা এখনো বিষয়টি ‘দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা’র মাধ্যমে সমাধান করার ওপর জোর দিচ্ছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটা স্পষ্ট, মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় অঙ্গীকার রক্ষা করে না। এগুলোকে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মিয়ানমার।
রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় অংশটি বাংলাদেশে আশ্রয়ে রয়েছে। এত বিপুল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে বিরাট এলাকা স্থানীয় মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। এটি চাপ সৃষ্টি করছে জাতীয় অর্থনীতির ওপর। দেশের অগ্রগতির জন্য এটি একটি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাপারটি অযাচিতভাবে বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ কোনো বন্ধু খুঁজে পাচ্ছে না; যার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করা যাবে এবং বাংলাদেশও ১০ লাখের বেশি মানুষের ভারমুক্ত হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান

সকল