২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাণিজ্য ঘাটতি

সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব নয়

-

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বাংলাদেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৪৬৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ঘাটতির এ পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ঘাটতি কিছুটা কম হলেও অর্থনীতির জন্য এ পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাস শেষে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে তিন হাজার ৭১৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে, আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে পাঁচ হাজার ১৮৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে হিসাবে মে মাস শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৬৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে বাংলাদেশী মুদ্রায় ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৩ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল এক হাজার ৭১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
বলা হচ্ছে, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ বড় বড় প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জোগান দিতে গিয়ে বহির্বিশ্বের সাথে লেনদেনে ঋণাত্মক অবস্থায় পড়েছে বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের ১১ মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। কিন্তু বাড়তি এ প্রবৃদ্ধি ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট হয়নি। কারণ পণ্য ও সেবা বাণিজ্যে যে পরিমাণ ঘাটতি হয়েছে, তা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণে বহির্বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের চলতি হিসাব ঋণাত্মক রয়েছে। আলোচিত সময়ে সেবা খাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশীদের পরিশোধ করা হয়েছে ৯৫৮ কোটি ডলার। এর বিপরীতে, বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে ৬৩৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩১৬ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে বর্তমানে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া রফতানি বাণিজ্য ও রেমিট্যান্স কিছুটা ইতিবাচক হলেও তা আমদানি ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া, ইতোমধ্যে ডলারের তুলনায় টাকার মান অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আমদানি ব্যয় বেড়ে এখন মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, যে হারে আমদানি হচ্ছে সে হারে রফতানি আয় হয়নি। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি হচ্ছে। এখন এটি কমাতে হলে রফতানি বাড়াতে হবে; এর কোনো বিকল্প নেই। তারা বলেন, দেশে বড় বড় প্রজেক্ট নেয়া হচ্ছে। নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে এবং আগামীতেও হবে। তার মানে আমদানি বাড়বেই। তবে সঠিক নিয়মে আমদানি করা হলে ব্যয় অনেকটা কমে আসবে। তাই আমদানির নামে অর্থপাচার হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, সুইস ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করছেন বাংলাদেশীরা। এর সাথে অর্থ পাচারের সম্পর্ক অবশ্যই রয়েছে এবং আমদানির ক্ষেত্রে অনিয়মই অর্থ পাচারের বড় উপায় বলে মনে করা হয়। সুতরাং এ বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নেয়া দরকার।
এ ব্যাপারে মূল দেখার বিষয় হলোÑ চলতি অর্থবছরে অর্থনীতির বিনিময় ভারসাম্য বহাল আছে কি না। আমাদের রফতানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিতেই পারে। সেটি পূরণ করার যেসব উপায় রয়েছে, দেখতে হবে সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে কি না। অর্থাৎ বিদেশী বিনিয়োগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যয় অথবা ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ হচ্ছে কি না। যদি হয়, তাহলে আপাতত সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা হয়তো বাস্তব।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ছেলে হারা মা সাথিয়ার কান্না যেন থামছেই না বৃষ্টির জন্য নারায়ণগঞ্জে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় প্রবাসী স্ত্রী থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায়, ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটারের তালিকা চান হাইকোর্ট আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরো ৪৬ বিজিপি সদস্য উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কক্সবাজারে ট্রেন লাইনচ্যুত, যোগাযোগ বন্ধ

সকল