২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
রেলে দুর্নীতির দশটি উৎস

অবিলম্বে দূর করা জরুরি

-

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার নানাবিধ দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির ১০টি উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। নয়া দিগন্তসহ পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, এসব দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে ওয়াগন, কোচ, লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ও ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট বা ডেমু ট্রেন কেনা এবং সেই সাথে ডাবল ও সিঙ্গেল লাইন এবং ডুয়েলগেজ ট্র্যাকের নির্মাণকাজে অনিয়ম, ট্রেনের টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কালোবাজারি, রেলওয়ে ওয়ার্র্কশপগুলোকে অকার্যকর করে রেখে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে জনগণের কোটি কোটি টাকার অপচয়, রেলওয়ের শত শত একর মূল্যবান জায়গা বেআইনিভাবে দখল প্রভৃতি।
জানা গেছে, দুদকের একজন কমিশনারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার রেলমন্ত্রীর কাছে সংশ্লিষ্ট অভিযোগসংবলিত প্রতিবেদন পেশ করেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, অপচয়ের খাত প্রভৃতি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে রেলওয়ে প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা, প্রতিবন্ধকতা, সমস্যা ও দুর্নীতি দূর করার উদ্দেশ্যে দুদকের একজন পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম আলোচ্য প্রতিবেদন প্রণয়ন করে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন মোট ১৩টি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়ম চিহ্নিত করে প্রতিবেদন পেশ করেছে।
দুদকের আলোচ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রেলওয়ের ওয়াগন, কোচ, ইঞ্জিন, ‘ডেমু’ ট্রেন কেনা ও সংগ্রহ করাসহ বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলস্টেশন সিগন্যালিং সিস্টেম পুনর্বাসন ও আধুনিকীকরণের কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। রেললাইনের নির্মাণকাজেও এটি পরিলক্ষিত হয়েছে। তদুপরি, ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে রেলওয়ের কাজে দুর্নীতি করা হয়। প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়েছে, সৈয়দপুর, পাকশী, ঢাকা, লালমনিরহাট এবং চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ পুনর্বাসন এবং নিলামে যন্ত্রাংশ বিক্রির ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘটেছে। এতে সরকার হয়েছে আর্থিক ক্ষতির শিকার। রেলের যন্ত্রাংশ ঠিকভাবে সংস্থাপন না করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রেনের টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কালোবাজারিতে রেলকর্মচারীরা জড়িত। তাদের সহযোগিতায় কিছু দালাল আন্তঃনগর ট্রেনের বেশির ভাগ টিকিট কিনে নিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করছে। এ কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনগণকে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আন্তঃনগরসহ বিভিন্ন ট্রেনে সরবরাহ করা খাবার নিম্নমানের বলে জনস্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক নয়। তদারকি ও মনিটরিং না থাকায় এই খাবারের দামও বেশি।
‘ভ্রমণের রাজা’ হিসেবে যে রেলগাড়িকে মর্যাদা দেয়া হতো, আজ তার নানা সমস্যা ও করুণ দশা নিদারুণ উদ্বেগজনক বৈকি। নিকট অতীতেও রেল যোগাযোগব্যবস্থা ছিল সবচেয়ে আরামদায়ক, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। দেশে রেলপথের প্রসার তো হয়ইনি, বরং আগের রেললাইনগুলোর পর্যাপ্ত সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ পর্যন্ত করা হয় না। তদুপরি, সড়ক ব্যবস্থার দিকে ‘অতি মনোযোগ’ এ খাতে বিপুল অপচয়, দুর্নীতি ও অনিয়মের পথও খুলে দিয়েছে। এ দিকে, রেলযোগাযোগ যথেষ্ট গুরুত্ব না পাওয়ায় ট্রেনের আরাম তো দূরের কথা, দুর্বৃত্তপনা আর দুর্ঘটনা রেলপথের নিরাপত্তা হরণ করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে দুদকের প্রতিবেদনটিকে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে রেলযোগাযোগব্যবস্থার গৌরবময় ঐতিহ্য তথা জনবান্ধব ভূমিকার সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল