‘আইনের দেয়াল’ সবচেয়ে শক্তিশালী
- ০৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
মাত্র চার মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণপ্রবাহ এবং বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী কর্ণফুলীর বেশ কিছু জায়গা অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু তা আবার বেআইনিভাবে দখল করে নেয়া হচ্ছে প্রকাশ্যেই। এমনকি, সেখানে ১০টি কারখানা ও গুদাম স্থাপন করা হয়েছে আগের জবরদখলদারদের উদ্যোগেই। অনন্যোপায় হয়ে দখল ঠেকাতে বন্দরের কর্তৃপক্ষ দুই মাস আগে সেখানে দেয়াল তুলতে বাধ্য হয়েছিল। উচ্ছেদের সময় এসব কারখানা গুঁড়িয়ে দেয়া সত্ত্বেও অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সেগুলো আবার নির্মাণ করা হয়েছে অবৈধপন্থায়।
একটি সহযোগী দৈনিকের সচিত্র সংবাদে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনের সাথে প্রকাশিত একটি দাবিতে দেখা যায়, গত শনিবার নগরীর মাঝির ঘাট এলাকায় টিনের ঘর বানিয়ে কর্ণফুলী নদী দখল করা হচ্ছে। এ দিকে, বেআইনি স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের পর জেলা প্রশাসনের সীমানা চিহ্ন এবং বন্দরের সীমানা দেয়ালের ভেতরে জবরদখল করে আবার প্রকাশ্যে বেআইনি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ আইনানুগভাবে এই দেয়াল দেয়ার কথা তাদের জানিয়েছে। তবুও উচ্ছেদকৃত স্থানে বহু স্থাপনা গড়ে উঠেছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবে বলে জানানো হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বলেছেন, নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর সম্পূর্ণরূপে অর্পিত।
হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক, গত ৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলীর বেআইনি স্থাপনা উচ্ছেদ করা শুরু হয়। তখন সদরঘাট থেকে মাঝির ঘাট পর্যন্ত ২০ একরের মতো জায়গা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। সেখানে নদীর অংশ নির্ধারণ করে খুঁটি দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, ‘অনেক কষ্ট করে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিলাম। আবার সেখানে স্থাপনা গড়ে উঠছে। অপর দিকে, এখন উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।’ পত্রিকার আলোচ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মাঝির ঘাট এলাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষের তোলা ৪২০ ফুট দীর্ঘ দেয়ালের কাছে নতুন ১০টি টিনের স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে লবণের গুদাম ও কারখানা হিসেবে। খালের পাশ ধরে নদীর মুখ পর্যন্ত আরো একটি দেয়াল তোলা হয়েছে, যার পাশ ঘেঁষে কয়েকটি লবণ কারখানা ও গুদাম চালু করা হয়েছে আবার। এর একটি কারখানার মালিক স্বীকার করেছেন, উচ্ছেদের সময় তাদের দু’টি কারখানা ভেঙে দেয়া হয়েছিল।
কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে হাইকোর্টে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেছেন, ‘উচ্ছেদ করা জায়গায় নতুন করে কোনো স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এমনকি বন্দর কর্তৃপক্ষও এ জন্য অনুমতি দিতে পারে না। তা করা হলে আবার আদালতের শরণাপন্ন হবো।’ তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী, জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কাজ শুরু করে। গত ৯ এপ্রিল এসব স্থাপনা এক মাসের মধ্যেই অপসারণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দখল ঠেকানোর জন্য নির্মিত দেয়ালের বাইরে বা রাস্তার দিকেও বন্দরের জায়গা আছে।
আসলে ‘আইনের দেয়াল’ই সবচেয়ে শক্তিশালী দেয়াল তথা সর্বাধিক কার্যকর প্রতিবন্ধক হওয়া উচিত যেকোনো অন্যায়-অপরাধের বিরুদ্ধে। এ জন্য কর্ণফুলীসহ সব নদী, খাস জমি এবং সরকারি জায়গা উদ্ধারের স্বার্থে আইনের ত্বরিত ও কঠোর প্রয়োগই কাম্য। এ জন্য প্রশাসনকে আন্তরিক, নিরপেক্ষ, দায়িত্ববোধসম্পন্ন ও সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা