নিরাপদ সড়ক গড়ায় বড় বাধা
- ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০
বাংলাদেশে সড়ক যোগাযোগে অনেক উন্নতি হয়েছে। ফলে দেশের যেকোনো প্রান্তে এখন অল্প সময়ে পৌঁছানো সম্ভব। কিন্তু শৃঙ্খলা না থাকায় আগের চেয়ে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কয়েক গুণ বেড়েছে। এতে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ হতাহত হচ্ছেন। এর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। যারা এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা যেন সব জেনেবুঝেও গভীর ঘুমে অচেতন। এর প্রমাণ মেলে উচ্চ আদালতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) একটি প্রতিবেদনের দিকে নজর দিলে।
হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে বিআরটিএ’র দাখিল করা এ প্রতিবেদনে জানানো হয়, সারা দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে আনফিট গাড়ি আছে চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯টি। এ ছাড়া ঢাকা শহরে নিবন্ধিত গাড়ি ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬০টি, যার মধ্যে আনফিট এক লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সারা দেশে লাইসেন্সধারী চালক ৩৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৯২ জন। ঢাকায় রয়েছেন তাদের ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৮ জন। তবে দেশে সর্বোচ্চ কতটি অনিবন্ধিত গাড়ি রয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। জানা যায়, প্রতি বছর গড়ে ১৩ লাখ ৯১ হাজার গাড়ি ফিটনেস সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছে। আদালতের নির্দেশে বিআরটিএ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় দেশবাসী তা জানতে পারলেন। তা না হলে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অজানাই থেকে যেত।
হাইকোর্ট ২৭ মার্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে সারা দেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সহীন চালকদের তথ্য জানাতে বিআরটিএ চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের উত্তর ও দক্ষিণের ডিসি এবং বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে নির্দেশ দেন।
সচেতন সব মহল থেকে জোরালোভাবে বলা হচ্ছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার পেছনে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং নিবন্ধনহীন চালকের গাড়ি চালানো দায়ী। কিন্তু তা রোধে বিআরটিএ’র কার্যক্রম উল্লেখ করার মতো নয়। সংস্থাটির পুরো জনবল তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। শুনানিকালে বিআরটিএ-কে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘আপনারা কী করেন? কিভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে? এটা নিয়ে কেন আদালতে আসতে হবে? আদালতকেই বা কেন আদেশ দিতে হবে?’ নিবন্ধিত ফিটনেসবিহীন, চলাচলকারী যানবাহন এবং লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে আনফিট-অনিবন্ধিত যানবাহন কিভাবে চলে? কেন ব্যবস্থা নেয়া হয় না?’
নিয়মানুযায়ী, মোটরসাইকেল ছাড়া সব ধরনের গাড়ির প্রতি বছর ফিটনেস যাচাই এবং সার্টিফিকেট নবায়ন করা বাধ্যতামূলক। এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নজরদারির অভাবে এগুলো অবাধে চলাচল করছে।
রাজধানীতে দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। এরপর দেশবাসী আশা করেছিলেন, কঠোর আইন প্রয়োগ করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেবে সরকার। তবে অন্যান্য বিষয়ের মতো এই দাবি নিয়েও সবাই আশাহত হয়েছেন। গত ঈদুল ফিতরের সময়ও মাত্র কয়েক দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অবশ্যই আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। এ ক্ষেত্রে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই। নিরপেক্ষভাবে আইন প্রয়োগে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দ্রুত নিরাপদ সড়ক গড়ার বিকল্প নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা