২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
লোকসানে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান

সতর্ক পদক্ষেপ দরকার

-

বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বরাবরই অবহেলার শিকার হয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে যেভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার কথা, সেভাবে তারা করেন না। প্রতিষ্ঠানের চেয়ে নিজেদের পদ-পদবি এবং লাভের ব্যাপারটাতে তারা বেশি নজর দিয়ে থাকেন। ফলে দেখা যায়, একই ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যখন লাভ করছে তখন সরকারি প্রতিষ্ঠান লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একপর্যায়ে লাভ দেখতে শুরু করে। সর্বশেষে দেখা যাচ্ছে, এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো আবার লোকসানের ধারায় ফিরে গেছে। কেন প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসানের ধারায় ফিরে গেল, সেটা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
বিস্তারিত প্রতিবেদনে নয়া দিগন্ত লিখেছে, লাভ-লোকসান মিলিয়ে টানা পাঁচ বছর নিট মুনাফায় থাকার পর এখন আবার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নিট লোকসানে উপনীত হয়েছে। বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লাভ-লোকসান মিলিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ৪৬ প্রতিষ্ঠানের নিট লোকসানের পরিমাণ প্রায় চার হাজার ৩২৫ কোটি টাকা দাঁড়াবে বলে প্রাক্কলন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে লাভ-লোকসান মিলিয়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল প্রায় পাঁচ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা। সরকারের বাজেট ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ইতঃপূর্বে ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় দুই হাজার ৬০৫ কোটি টাকা নিট লোকসান দিয়েছিল। এরপর ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সব মিলিয়ে নিট মুনাফায় রয়েছে। ওই অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিট মুনাফা হয়েছিল প্রায় তিন হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। আর গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মোট নিট মুনাফা হয়েছে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। ওই বছর নিট মুনাফা ছিল ১০ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিপুল লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে গড়ে লোকসান দেখা যাচ্ছে। দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চলতি অর্থবছরে মাত্র ১৩টি প্রতিষ্ঠান লোকসান দিয়েছে। অর্থবছর শেষে এগুলোর মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩ হাজার ৬৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে একই প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসানের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান বাড়ছে এক হাজার ৭০১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমে যাওয়ার পাশাপাশি লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান বৃদ্ধি ও মুনাফা অর্জনকারী দু-একটি প্রতিষ্ঠান লোকসান দেয়ার কারণে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। ১৩টি লোকসানি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছেÑ ‘বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসানও গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে পিডিবির লোকসান প্রাক্কলন করা হয়েছে ১০ হাজার ২৭১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পিডিবির মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ২৮৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটি এবার ৯৮৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অতিরিক্ত লোকসান দিচ্ছে। অন্যান্যের মধ্যে চলতি অর্থবছর শেষে ‘বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন’ (বিএসএফআইসি)-এর লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৮১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা; (গত অর্থবছরে লোকসান দিয়েছে ৮৩৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা)।
চিনির বিপুল চাহিদা রয়েছে দেশে। চাহিদা থাকায় বাজারে বিদেশী চিনিও রয়েছে। এ অবস্থায় এ প্রতিষ্ঠানটির লোকসান গোনা মেনে নেয়া যায় না। একইভাবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন লোকসান দিচ্ছে।
লাভ-লোকসানের যে হিসাব তাতে বিষয়টি স্পষ্ট, আরেকটু চেষ্টা ও আন্তরিকতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাভের ধারায় ফেরাতে পারে। অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনাকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এটা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। এ জন্য দরকার সরকারের সতর্ক নজরদারি।


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল