২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ভূমধ্যসাগরে ভাসছে ৬৪ বাংলাদেশী

তাদের উদ্ধারে দরকার সরকারি তৎপরতা

-

উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় মানুষ ইউরোপে যাওয়ার জন্য সীমাহীন ঝুঁকি নিচ্ছে। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে গত মাসে ৬০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিগত চার মাসে প্রাণ হারিয়েছে ১৬৪ জন। এভাবে বেঘোরে প্রাণ হারানোর ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। তার পরও ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে মানুষ। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ৬৪ বাংলাদেশীসহ ৭৫ জনের একদল অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশী ভূমধ্যসাগরে ভাসছে। মিসরীয় একটি নৌযান তাদের উদ্ধার করলেও এই অভিবাসন প্রত্যাশীদের কেউ আশ্রয় দিচ্ছে না। বেশ কয়েক দিন ধরে সাগরে ভাসমান থেকে এই মানুষগুলোর অবস্থা এখন দুর্বিষহ। অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ যেমন সমর্থনযোগ্য নয়; একইভাবে আটকে পড়া মানুষেরও বাঁচার অধিকার রয়েছে।
উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার অবৈধ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভুমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালি পৌঁছেছেন দুই হাজার ১৪৪ জন। ইউরোপে প্রবেশে প্রত্যাশী লোকদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ২২ শতাংশ তিউনিশিয়ার নাগরিক। এর পরে রয়েছে পাকিস্তান, আলজেরিয়া, ইরাক ও বাংলাদেশের নাগরিকরা। আফ্রিকার দেশের দরিদ্র মানুষদের ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা একটি সাধারণ ঘটনা। কেবল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিলেই তারা ইউরোপে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মানুষের এভাবে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা আশ্চর্যজনক ব্যাপার। যেখানে পদে পদে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। সাগরে ডুবে মারা যাওয়া ছাড়াও অনেকে অপহরণের শিকার হয়ে পুরো পরিবারের জন্য বড় বিপর্যয় ডেকে আনেন। ইউরোপ পৌঁছার স্বপ্ন ছেড়ে দিয়ে অপহরণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে চেষ্টা করেন। সর্বশেষ ঘটনাটির আগে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার সময় তিউনিশিয়ার উপকূলে নৌকাডুবে ষাটজনের প্রাণহানি ঘটে। এদের মধ্যে ছিলেন অর্ধশত বাংলাদেশী। এবার উদ্ধার হওয়া নৌযানটির যাত্রীরা বিপত্তির মধ্যে পড়েছেন। ইতোমধ্যে তারা খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা জানিয়েছেন, তাদের ইউরোপে ঢোকার সুযোগ দেয়া হোক। রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নৌকাটিকে কূলে ভেড়ার অনুমতি দিচ্ছে না তিউনিশিয়া। তিউনিশিয়ার উপকূলে অভিবাসী কেন্দ্রটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি অভিবাসী রয়েছে বলে তারা জানাচ্ছে। নতুন করে কাউকে জায়গা দেয়ার সুযোগ সেখানে নেই। একদল লোক এভাবে সাগরে ভাসতে ভাসতে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারেন না।
বাংলাদেশীদের অবৈধভাবে ইউরোপে অভিবাসন প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সাথে বাংলাদেশী নাগরিকেরা প্রাণ হারাচ্ছেন। এর বাইরে আরো একটি ব্যাপার হচ্ছে প্রতারণা। অনেকে ইউরোপ পৌঁছে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করেন বাংলাদেশী নাগরিকদের সাথে। এর মধ্যে রয়েছে আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করার ঘটনা। এ ধরনের অনেক ঘটনা দেখা গেলেও এই প্রতারণা বন্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি। অভিবাসন বিষয়ে সরকারের সক্রিয় অবস্থান থাকা প্রয়োজন। সরকারের অবহেলা গাফিলতির কারণে প্রতারকরা নতুন নতুন মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে করে এই প্রতারণা বন্ধ হয়।
ভূমধ্যসাগরে ভাসমান ৬৪ বাংলাদেশী নাগরিককে উদ্ধার করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ দরকার। জাতিগতভাবে আমাদের এ প্রতিশ্রুতি রয়েছে যে, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে আটকে পড়া মানুষকে আমরা উদ্ধার করব। যদিও বিভিন্ন সময় বিপদে পড়া বাংলাদেশীরা সরকারের পক্ষ থেকে সক্রিয় সহযোগিতা পাননি।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজার ২টি হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান, তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের তীব্র তাপদাহে পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির ৬ জেলায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ, সিলেট বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা মাতামুহুরিতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ২ আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ ফেনীতে ইসতিসকার নামাজে মুসল্লির ঢল গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে ইসরাইলের সামরিক ব্যয় মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা : কাদের গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন

সকল