১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
শান্তি সূচকে বাংলাদেশের অবনতি

এই অবনমন ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

-

পৃথিবীর কম শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশ। তা ছাড়া, সময়ের সাথে ক্রমেই এ অবস্থার অবনতি ঘটে চলেছে। উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহত দাবি করা হলেও বৈশ্বিক শান্তি সূচকে (জিপিআই) বড় ধরনের অবনতি ঘটেছে বাংলাদেশের। এই সূচকে গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে ৯ ধাপ পিছিয়েছে আমাদের দেশ। গত বছর বিশ্ব শান্তি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৩তম। তবে বিশ্বের শীর্ষ শান্তির দেশ হচ্ছে আইসল্যান্ড। ২০০৮ সাল থেকে দেশটি তার এই অবস্থান অব্যাহতভাবে দখল করে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, পর্তুগাল ও ডেনমার্ক। তবে এবারের সূচকে ভারতের অবস্থান আমাদের চেয়েও খারাপ অবস্থানে, ১৪৩তম স্থানে। আর পাকিস্তান ১৫৩তম অবস্থানে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস’ (আইইপি) এই বিশ্ব শান্তির সূচক তৈরি করে। সূচকে বিশ্বের স্বাধীন ১৬৩টি দেশের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন, অর্থনৈতিক মূল্য, ধারা প্রবণতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে দেশগুলোর নেয়া পদক্ষেপের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। সূচকে দেখা যায়, বাংলাদেশের মানুষ যাপিত জীবনে শান্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হচ্ছে, এবার ভুটান এই শান্তি সূচকে শীর্ষ ২০-এর তালিকায় নিজের স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। গত ১২ বছরে দেশটি এ অবস্থান ৪৩ ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে আমাদের সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করছেÑ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে, সেখানে কেন আমরা শান্তি সূচকে এভাবে ক্রমেই অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছি?
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বস্তিতে বসবাসরতদের বেশির ভাগই, অর্থাৎ ৮১ শতাংশই জলবায়ু উদ্বাস্তু। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এরা নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে ঢাকার নোংরা বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে। ভবিষ্যতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে আরো এক কোটি ৮০ লাখ লোক জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ তাদের ভূমি ও বসত হারিয়ে ফেলবে। তখন বাংলাদেশ শান্তির সূচকে নিশ্চিতভাবে আরো অবনতির দিকে যাবে।
এবারের এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, চীন, বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দেশগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি খুবই বেশি। এ অঞ্চলে ৩৯ কোটি ৩০ লাখ মানুষ এই ঝুঁকির আওতায় পড়ে। তা ছাড়া, প্রতিবেদনে আরো বলা হয়Ñ ২০১৮ সালে বাংলাদেশে সহিংসতার কারণে ব্যয় হয়েছে ২২২৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা জিডিপির ৩ শতাংশ।
শুধু এসব কারণেই বাংলাদেশ শান্তির সূচকে ৯ ধাপ পিছিয়েছে, তা কিন্তু বলা যাবে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশে একটি চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান সেই ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর থেকে। ২০১৮ সালের মধ্যরাতেই ব্যালট দিয়ে বাক্সভর্তি করে ভোটারবিহীন এক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন দল অগণতান্ত্রিক আচরণ ও অবস্থার আরো অবনতি ঘটিয়েছে। দেশে কার্যত বিরাজ করছে রাজনৈতিক চাপ ও অসন্তোষ। এ চাপ ও অসন্তোষ ছাড়াও আছে ক্ষমতাসীন দলের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে হানাহানি ও খুনোখুনির ঘটনা। আছে সামাজিক চরম অস্থিরতা, হত্যা, খুন, গুম ও ধর্ষণের ব্যাপক তাণ্ডব। এসবের কারণেও আমাদের এই অবনতি।
সব কিছু মিলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে নেই। প্রয়োজনীয় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া না হলে শান্তি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি ঠেকানো যাবে না, তা অব্যাহত গতিতে আরো বেড়েই চলবে, এটুকু নিশ্চিত বলে দেয়া যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’

সকল