২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
জলবায়ু নিয়ে উদ্বেগজনক রিপোর্ট

৮০ বছরের মধ্যে দেশের একাংশ ডুবে যাবে

-

সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক তথ্য জানানো হয়েছে। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স নামের জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ আগামী ৮০ বছরের মধ্যে পানির নিচে তলিয়ে যাবে বাংলাদেশের বড় একটি অংশ। এতে আরো বলা হয়, শুধু বাংলাদেশের কিছু অংশই নয় লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, সাংহাই ও ভারতের কিছু দ্বীপও পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে যাবে। সম্প্রতি বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এত দিন সব গবেষণা অনুযায়ী ২১০০ সালে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হতো। তবে ওই সব গবেষণা ছিল একান্তই রক্ষণশীল। বাস্তবতা হচ্ছে, কার্বন নিঃসরণের হার পরিবর্তন না হলে এই সময়ের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ২ মিটারের মতো। ফলে বিশ্বজুড়ে তলিয়ে যাবে প্রায় ৮০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের একটি বড় অংশও। এর ফলে কোটি কোটি লোককে অবশ্যই বাড়িঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে। যেসব জায়গা সমুদ্রে তলিয়ে যাবে, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ফসল উৎপাদনের এলাকা। যেমন নীল নদের বদ্বীপ এলাকা। মিসরের নীল নদের বদ্বীপ কৃষির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এটিও একদিন তলিয়ে যাবে সমুদ্রের নিচে।
যারা সর্বসাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেছেন, তারা অবশ্য আমাদের আশার কথাও শুনিয়েছেন। তারা বলেছেন, পৃথিবীর একটা বড় অংশ এই তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিণতি এড়ানোর এখনো সময় আছে। আর এর উপায় হচ্ছে, কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের কার্বন নিঃসরণ বড় আকারে কমিয়ে আনতে হবে। গবেষকেরা বলছেন, নতুন জরিপ মতেÑ ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে এখনকার চেয়ে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতর। আর যদি কার্বন নিঃসরণ বর্তমান হারে চলে, তবে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ৬২ সেন্টিমিটার থেকে ২৩৮ সেন্টিমিটার। এর আগে ২০১৩ সালের রিপোর্টে বলা হয়েছিলÑ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫২ থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলার প্রক্রিয়ায় অনেক কিছুই তাতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
আমরা অন্যান্য রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি, গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকায় ব্যাপক হারে বরফ গলার ঘটনা ঘটছে এবং সময়ের সাথে এর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। অপর দিকে গোটা বিশ্বের তাপমাত্রাও ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু কার্বন নিঃসরণের অবসানে এখনো বিশ্বব্যাপী উল্লেখযোগ্য কোনো সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। যদি ভবিষ্যতেও তা সম্ভব না হয়, তবে আমাদের এ পরিণতি ভোগ করতেই হবে।
বিশ্বনেতাদের উচিত সমন্বিত ও সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়ে আবহাওয়ার এ অনাকাক্সিক্ষত পরিবর্তন অবশ্যই ঘটাতে হবে। তা অবসানে শুধু একটি দেশের প্রয়াসই যথেষ্ট নয়, এ জন্য প্রয়োজন বিশ্ববাসীর যৌথ পদক্ষেপ। আশা করি, বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে সচেতন ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে বিশ্বের নেতৃত্বদানকারী দেশগুলোকে।

 


আরো সংবাদ



premium cement