২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দ্রুত বাড়ছে হৃদরোগীর সংখ্যা

অভ্যাস বদলাতে হবে

-

তৃতীয় বিশ্বের অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও হৃদরোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশে ২০ বছরে হৃদরোগী বেড়েছে ২০ গুণ। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও বেড়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই নারী। বর্তমানে দেশে ৩০ বছর বয়সেই অনেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ পাশ্চাত্যে ৬০ বছর বয়সীদের সাধারণত হৃদরোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। দুশ্চিন্তার বিষয়, কর্মক্ষম বয়সে অর্থাৎ তরুণদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। অলস সময় কাটানো, বসে কাজ করা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, খাবারে ভেজাল, মানসিক চাপসহ নানা কারণে মানুষের মধ্যে হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ কার্ডিওভাসকুলার রোগে মারা যান, যা বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর ৩১ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হৃদরোগে তিন-চতুর্থাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশে হৃদরোগে মৃত্যু হয় ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ মানুষের। বিশ্বে বর্তমানে সর্বাধিক মৃত্যুর কারণ এ হৃদরোগ। আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনার পরই মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হৃদরোগ।
প্রধানত জীবনযাত্রার সমস্যা আর মধ্য বয়সের শুরুতে মানসিক চাপে দেশে হার্ট অ্যাটাকের হার বাড়ছে বলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। উচ্চ ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি আর অস্বাভাবিক রক্তচাপে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে থাকে। ব্লক হয়ে যাওয়া ধমনি হৃদযন্ত্রের একাংশে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ রক্তের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করলে হার্ট অ্যাটাক হয়। যদি ব্লক হয়ে যাওয়া ধমনিকে দ্রুত চালু করা না যায়, তাহলে ওই ধমনি দিয়ে চালিত হৃদযন্ত্রের অংশটি অক্ষম হতে শুরু করে। বুকে ব্যথা, চাপ অনুভব আর জ্বালাপোড়া, বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। হার্ট অ্যাটাকের আগে বেশ কয়েক ঘণ্টা, কয়েক দিন বা সপ্তাহখানেক এমনটি অনুভূত হয়। হৃদযন্ত্র অস্বাভাবিক ছন্দে চলতে শুরু করলে এবং হঠাৎ করে অচল হয়ে পড়লে আকস্মিক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কখনো হাত থেকে শরীরের বাম দিকে নিচের অংশ পর্যন্ত একটি উপসর্গমূলক ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা বিপদের লক্ষণ। বুকে ব্যথা কিংবা চাপ অনুভূতি যদি গলা কিংবা চোয়াল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তা হার্ট অ্যাটাকের স্পষ্ট লক্ষণ। এ ছাড়া যারা নিয়মিত কাজ যেমন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, দ্রুত হাঁটা ইত্যাদির পর আকস্মিক ক্লান্তিবোধ কিংবা জোরে জোরে শ্বাস নেয়ার প্রয়োজন অনুভব করেন, তাদের অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম কিংবা হাঁটা, লবণ বর্জন, চর্বিজাতীয় খাবার ও ধূমপান পরিহার, ভাত কম খাওয়া ও সবজি বেশি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে। যে পরিবারে হৃদরোগী ছিল কিংবা আক্রান্ত হয়েছে সেই পরিবারের সদস্যদের ৩০ বছর বয়স থেকে নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে আমাদের নিজেদের যাপিত জীবনের অভ্যাসগুলো যেমন বদলানো দরকার, তেমনি দেশে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারেরও বাজারে কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন; যাতে কেউ ভেজাল খাবার বিক্রি করতে না পারে। করলে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। কারণ, অনিরাপদ খাবারও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী।


আরো সংবাদ



premium cement
পিরোজপুরে বাসের ধাক্কায় নদীতে ৪ মোটরসাইকেল ফরিদপুরে নিহতদের বাড়ি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী টিকটকে ভিডিও দেখে পুরস্কার, প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে: পাটমন্ত্রী মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সালাম নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ সচিব সৌরশক্তি খাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় জার্মানি ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি’ মোদি কি হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের চেনা রাজনীতিতে ফিরছেন? টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল