২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সুন্দরবনে ৫ কোটি ৬০ লাখ টন কার্বন

মিলবে কয়েক হাজার কোটি টাকা

-

পরিবর্তনশীল বিশ্বে সময়ের সাথে সাথে একটি দেশের রফতানি পণ্যের তালিকায়ও আসে পরিবর্তন। এক সময় প্রচলিত রফতানি পণ্য অপ্রচলিত রফতানি পণ্যে এবং অপ্রচলিত রফতানি পণ্য প্রচলিত পণ্যে রূপ নেয়। এই প্রক্রিয়ার প্রতি যে জাতি নজর রাখতে পারে, সে জাতিই পারে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে। তাই আমাদেরও উচিত এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
কার্বনও হতে পারে আমাদের দেশের জন্য একটি রফতানি পণ্য। বিশ্বব্যাংক এবং আমাদের বন বিভাগের সমীক্ষা অনুযায়ী, পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনে রয়েছে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টন কার্বন। আমরা এই কার্বন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে রফতানি করতে পারি। সবচেয়ে আনন্দদায়ক ব্যাপার হচ্ছে, কার্বনবাণিজ্যে বনের কোনো ক্ষতি হয় না। এ দিকে বিশ্ববাজারে কার্বনের দাম বেড়ে চলেছে। শিকাগো কার্বন মার্কেটের সর্বোচ্চ বাজারদর অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১৮ হাজার ৮১৬ কোটি টাকার কার্বন বিক্রি করতে পারে। তবুও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাদের কার্যক্রম উদ্যোগের মাধ্যমে কার্বন হতে পারে আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রফতানি পণ্য।
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ অটুট রেখেই এর ধারণকৃত কার্বন বিক্রির জন্য ২০০৯ সালে সুন্দরবন ফরেন কার্বন ইনভেন্টরি-২০০৯ নামে যৌথ সমীক্ষা চালায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একাধিক সংস্থা। যৌথ সমীক্ষায় গাছের সংখ্যা, ঘনত্ব, উচ্চতা, লতা ও গুল্ম এবং জৈব উৎপাদন মিলিয়ে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টন কার্বনের সন্ধান পেয়েছে বন বিভাগ। অথচ বিপুল অর্থ ব্যয় করে এ সমীক্ষা চালানোর পর ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও কার্বন বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক কার্বন স্টক মার্কেটে আজো নিবন্ধন করা হয়নি। নিয়োগ দেয়া হয়নি কোনো আন্তর্জাতিক ব্রোকার হাউজকেও।
কার্বন নিঃসরণকারী শিল্পোন্নত দেশ এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কার্বন কিনে থাকে। বিশ্বব্যাংকের ফরেস্ট কার্বন ফ্যাসিলিটি তহবিল, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো কার্বন বাজার এবং লন্ডনের আন্তর্জাতিক কার্বন স্টক মার্কেটে বেচাকেনা হয়। দেখা গেছে, ২০১০ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় কার্বনের দাম কমে ১০ ডলারে নেমে এলেও ২০১৭ সাল থেকে আবার দাম বাড়তে শুরু করে। ২০১৮ সালের শেষ দিকে এর দাম প্রতি টনে ১৩ ডলার থেকে ২৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে। আমাদের উচিত যত শিগগিরই সম্ভব কার্বনবাণিজ্যের উদ্যোগ নেয়া। এর মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি নিশ্চিত ও বড় সুযোগ পেতে পারি।


আরো সংবাদ



premium cement