১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সড়কে আবারো মর্মান্তিক মৃত্যু

অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে

-

বেপরোয়া বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে আবারো রাজধানীর সড়কে ঝরল তাজা প্রাণ। নির্ধারিত জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বাসের নিচে চাপাপড়ে মঙ্গলবার মারা যান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। এ ঘটনায় আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকার রাজপথ। সারা দিন ধরে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে অচল হয়ে পড়ে পুরো নগরী। গতকাল বুধবারও এই বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
যন্ত্রদানবের চাকায় আবরারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে প্রগতি সরণির কুড়িল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ছয়টি জায়গায় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাদের সাথে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আবরারের বুকে রক্ত কেন’, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হোক’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূর। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, এবারের আন্দোলনে আঘাত করা হলে ‘দাঁতভাঙা’ জবাব দেয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা বুধবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সড়কে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান। এটিকে তারা গত বছরের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আট দফা দাবি হলোÑ ১. পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করতে হবে। ২. আটক চালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত শিগগির সম্ভব সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ৩. ফিটনেসবিহীন বাস ও লাইসেন্সবিহীন চালককে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ৪. ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সব স্থানে আন্ডারপাস, স্পিডব্রেকার এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। ৫. বর্তমান আইনের পরিবর্তন করে সড়কে হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ৬. দায়িত্বে অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৭. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপ ও যাত্রীছাউনি স্থাপন করতে হবে এবং ৮. ছাত্রদের হাফপাস অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।
নিহত আবরারের বন্ধু সাকিব গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘গত বছর দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। সেই আন্দোলনে সক্রিয় থেকে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছিলেন বিইউপির ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ, একপর্যায়ে যানচলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে একসাথে কাজ শুরু করেন তারা। ৫ আগস্ট নিরাপদ সড়কের দাবিতে মিছিল করতে গিয়ে তিনি সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় হেলমেট বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছিলেন। সবার জন্য নিরাপদ সড়ক চেয়েছিলেন আবরার; কিন্তু অবশেষে নিজেই সেই সড়কে মারা গেলেন।’ আবরারের সহপাঠী আবদুল কাদির খান বলেন, ‘আমরা যে দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম, সে দাবি কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়েছে? সড়ক নিরাপদ করার যে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, তা যে মোটেও বাস্তবায়ন করা হয়নি, আবরারের মৃত্যুই তার বড় প্রমাণ।’
আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রমাণ হলো, সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ কিছুই করেনি এবং চালকের খামখেয়ালিপনা ও বেপরোয়া গাড়ি চালনা রোধে প্রশাসন কার্যত পদক্ষেপ নেয়নি। মূলত চালকদের হাতে পুরো রাজধানীবাসীর জীবন এখনো জিম্মি। এর কারণ সড়কে মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তিবিধানের কোনো ব্যবস্থা আজো নিশ্চিত হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement
মোরেলগঞ্জে সৎভাইকে কুপিয়ে হত্যা দুবাই পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণ কি কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানো? এ দেশের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান পিছিয়েছে ডি মারিয়ার বাংলাদেশে আসার সময় ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

সকল