২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নির্বাচন শেষে রক্তাক্ত বাঘাইছড়ি

পাহাড়ে সহিংসতা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন

-

একতরফা ও প্রায় ভোটারবিহীন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় সোমবার ১১৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণের পর রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ২৫ জন। সাজেক ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে ওই মর্মান্তিক ও ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা হতাহতদের উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরপর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে নির্বাচন নিয়ে রক্তপাতের আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। ঘাতকদের গুলিতে সাতজন নিহত হওয়ার পেছনে কারা থাকতে পারে, সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদের দুইজন প্রার্থীই একসময় ‘শান্তিবাহিনী’র সশস্ত্র সদস্য ছিলেন। তাদের একজন শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জন করেন। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) রাজনীতি করেন তিনি। অন্যজন জেএসএস (এম এন লারমা) নেতা, যিনি এবারের নির্বাচনে বাঘাইছড়ি উপজেলার বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের মধ্যে হানাহানির আশঙ্কা ছিল প্রবল। কিন্তু নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর নৃশংস হামলা হবে, তা কেউ ধারণা করেননি।
ওই অঞ্চলে আধিপত্য নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন দলের মধ্যে সঙ্ঘাত চলছে। পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের সময় পাহাড়ে ছিল জনসংহতি সমিতির আধিপত্য। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সাথে যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ‘শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষর করে, তখন পাহাড়ে একটি গ্রুপ সেটির বিরোধিতা করেছিল। জনসংহতি সমিতির ছাত্রসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠা করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফ। ২০১৭ সালে ইউপিডিএফ ভেঙে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। এখন আঞ্চলিক এ দলগুলো আরো বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় অস্থিরতা, হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণে এসব দল পরস্পরকে দায়ী করে থাকে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পাহাড়ি সংগঠনগুলোকে দায়ী করে আসছে।
এ দিকে পার্বত্য এলাকায় সঙ্ঘাতে গত ১৫ মাসে ৫৮ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে পাহাড়ের দুই জেলা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক দলগুলো সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির নয়মাইল এলাকায় সোমবার ভোট গণনা শেষে গাড়িতে করে ফেরার সময় নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সাতজন সন্ত্রাসীদের গুলিতে জীবন দিলেন।
শান্তিচুক্তির পর দেশবাসী আশা করেছিলেন, তিন পার্বত্য জেলায় শান্তির সুবাতাস বয়ে যাবে; কিন্তু তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এর কারণ, পাহাড়ে উপজাতিদের বিবদমান পক্ষগুলো একে অপরের দিকে অস্ত্র তাক করে রয়েছে। তাদের দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত বেড়েই চলেছে। এতে সাধারণ মানুষও হত্যা, হামলা, চাঁদাবাজি ইত্যাদির শিকার হচ্ছে।
আমরা মনে করি, পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পাহাড়ে অবস্থানরত উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের দমনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর তৎপরতা আরো বাড়ানো দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement
‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’ রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ

সকল