ঢাকায় ৩ হাজার প্রতিষ্ঠান আগুনের ঝুঁকিতে
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
রাজধানীর ৪২৩টি হাসপাতালের মধ্যে ৪১৬টিই রয়েছে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ১০৫টির অবস্থা অত্যন্ত মারাত্মক। আর মাত্র সাতটি হাসপাতালে আগুন নেভানোর মোটামুটি ব্যবস্থা আছে। অর্থাৎ ঢাকার কোনো হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণের সুযোগ-সুবিধা খুব সন্তোষজনক নয়। পত্রিকার খবরে আরো জানানো হয়েছে, ঢাকা মহানগরীতে অগ্নিঝুঁকিতে আছে অন্তত তিন হাজার প্রতিষ্ঠান। এর কারণ, ভবন নির্মাণের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের যে ৩০ দফা নির্দেশ রয়েছে, তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। যেসব হাসপাতাল খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের বিপদ। সব ক’টি হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ১৫টি পরিদর্শন দল গঠন করা হবে এ জন্য।
মাত্র সপ্তাহখানেক আগে দেশের অন্যতম প্রধান সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে হাসপাতালগুলোর অগ্নিঝুঁকির খবর জনমনে উদ্বেগ ও ভীতি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অগ্নিকাণ্ডে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও প্রায় দেড় হাজার রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে। দমকলবাহিনীর বহু ইউনিট কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
পত্রিকা লিখেছে, হাসপাতালে আগুন লাগলে কিভাবে নেভানো হবে এবং কিভাবে রোগীদের নিরাপদ স্থানে সরানো হবে, তার ব্যবস্থা নেই। দ্রুত রোগী নামানোর জন্য নেই চলন্ত সিঁড়ি। অনেকেই যথাযথ সনদ ছাড়া খেয়ালখুশিমতো বহুতল ভবনে হাসপাতাল চালু করে দিয়েছেন। এভাবে সর্বত্র একের পর এক হাসপাতাল গড়ে উঠছে। অথচ লিফট ও সিঁড়ি এমনভাবে বানানো যে, আগুন লেগে গেলে তাড়াতাড়ি রোগীসহ লোকজনকে নিচে নামানো অসম্ভব। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারসক্ষমতার কথা না ভেবে উঁচু উঁচু ভবনে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ জন্য কেউ কেউ অনিয়মের মাধ্যমে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করেছেন। দেশের অনেক শহরেই বর্তমানে বহুতল ভবনে হাসপাতাল চালু রয়েছে। হাসপাতালে থাকেন অনেক মুমূর্ষু রোগী, যারা অন্যের সাহায্য ছাড়া কিছুই করতে পারেন না। হাত-পা কিংবা অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভেঙে গেছে, এমন রোগীও রয়েছেন। আগুন লেগে গেলে এ ধরনের রোগীদের অবর্ণনীয় বিপদে পড়তে হয়।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের স্টোররুম থেকে কেন ও কিভাবে আগুন লাগল, এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করা এবং ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সেখানে আগুন লেগেছিল শিশু ও গাইনি ওয়ার্ডে। ফলে হতাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল অনেক। তা ছাড়া, দমকলের পর্যাপ্ত পানি রাখার পাশাপাশি দীঘি-পুকুরসহ জলাশয়গুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
পত্রিকার খবর মোতাবেক, রাজধানী ঢাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, মার্কেট, আবাসিক হোটেলসহ তিন হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এগুলোর ৯৬১টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকার ৬২২টি মার্কেট ও শপিংমল এ দিক দিয়ে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ‘সন্তোষজনক’ মাত্র পাঁচটি। রাজধানীর পরিদর্শনকৃত সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শুধু ১৩টির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকে ‘সন্তোষজনক’ বলা চলে। এ দিকে, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৭৮টি লাশ উদ্ধারসহ অনেকেই দগ্ধ ও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আমরা মনে করি, রোগী, শিক্ষার্থী ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে সর্বত্র অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা অবিলম্বে নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য ভবন নির্মাণসংক্রান্ত আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন, অসৎ পন্থায় অনুমোদন নেয়া বন্ধ করা, নিয়মিত পরিদর্শন, জলাধার সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ কাম্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা