২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
মৃত্যুমুখে গঙ্গানির্ভর সব নদী

আর কত পানি আগ্রাসন

-

জাতীয় একটি দৈনিক ‘মৃত্যুমুখে গঙ্গানির্ভর সব নদী’ শীর্ষক একটি উদ্বেগজনক খবর প্রকাশ করেছে। এ ধরনের খবর আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে দেখি মাঝে মধ্যেই। উদ্বেগের বিষয়, হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের নদনদী, খালবিল। আর এ জন্য একমাত্র দায়ী ফারাক্কা নামে ভারতের দেয়া মারণফাঁদ। এই বাঁধের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদনদীর শোচনীয় অবস্থা সময়ের সাথে আমাদের উদ্বেগের মাত্রা কেবলই বাড়িয়ে তুলছে। আমরা বারবার ভারতের কাছে এ ব্যাপারে নানা ওজর-আপত্তি জানিয়েও কোনো সাড়া পাইনি।
বিশেষ খবরে গতকাল দৈনিকটি গঙ্গানির্ভর নদীগুলোর মরতে বসার কথা জানিয়ে লিখেছেÑ ‘চোখের সামনে নদী খাল হচ্ছে, মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করছে, কিছু বলতেও পারছি না। সইতেও পারছি না। ভারতের কারণে দিনে দিনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে গঙ্গানির্ভর সব নদী। শুষ্ক মওসুম এলে নদনদীর অবস্থা কতটা শোচনীয় তা সবার চোখে ধরা পড়ে।’ কথাগুলো পদ্মার শাখা কুমার নদীপাড়ের বাসিন্দা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সালমান বিশ্বাসের। গাড়াগঞ্জের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া একসময়ের প্রমত্তা কুমার নদীর অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ জানিয়েছে, একসময় নদীর পাড় পর্যন্ত পানি থইথই করত। ছিল জোয়ার-ভাটা। এখন পানি পাওয়া যায় না একদম তলদেশেও। নদীগুলো ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। নদনদীর চেহারা দেখলে যে কারো কষ্ট লাগবে। শুধু কুমার নদী নয়, দক্ষিণ-পশ্চিমের সব নদনদীর অবস্থাই শোচনীয়। ঝিনাইদহের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্যাসেল ব্রিজ পার হওয়ার সময় দেখা গেছে নবগঙ্গার বেহাল অবস্থা। কুষ্টিয়ার লালন সেতু ও পাশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পানিশূন্য অবস্থা।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি, অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করেছে; তা কার্যত বাংলাদেশকে পঙ্গু করার জন্য যথেষ্ট। ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের নদনদীতে অভাবনীয় পলি পড়ে নদীগুলো বহু আগেই নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এখন নদীগুলো মরণাপন্ন। অনেক সেচ কর্মসূচি হুমকির মুখে। বাংলাদেশের এক বিরাট অংশ মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। অনেক উর্বর কৃষিজমি আজ বালুচরে পরিণত। নদীগুলোতে মাছ নেই। কৃষক ও মৎস্যজীবীদের বাধ্য হয়ে পাল্টাতে হয়েছে বাপ-দাদার পেশা। ফলে কৃষক ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায় এখন প্রায় নিঃস্ব। পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব সীমাহীন। কৃষি অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ার পথে।
ফারাক্কা বহু আগেই এ দেশের মানুষের কাছে ‘মারণফাঁদ’ নামে পরিচিত। সময়ের সাথে এই আখ্যায়ন যে যথার্থ, তার প্রমাণ মিলছে। ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল সেই যে পরীক্ষামূলক ভারত ফারাক্কা চালু করে, এর পর থেকে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে এলেও ভারত তাতে কান দেয়নি। এর আগে পাকিস্তান আমলেও এর বিরোধিতা করেছে এ দেশের মানুষ। এই বাঁধের নেতিবাচক প্রভাব শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের বিভিন্ন অংশেও পড়েছে। তাই যথার্থ কারণেই এই বাঁধ ভেঙে দেয়া উচিত। যদি তা না করা হয়, তবে অন্তত বাংলাদেশের জন্য গঙ্গার পানি পাওয়া নিশ্চিত করা দরকার। দ্রুত অবসান হওয়া দরকার ভারতের এই পানি আগ্রাসন।


আরো সংবাদ



premium cement
যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাব : মেসি ইভ্যালির রাসেল-শামীমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান আর নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ খণ্ডালেন ওবায়দুল কাদের আটকের পর নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে বদর যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন পণবন্দী জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝালকাঠিতে নিখোঁজের ২ দিন পর নদীতে মিলল ভ্যানচালকের লাশ বাল্টিমোর সেতু ভেঙে নদীতে পড়া ট্রাক থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার যুক্তরাষ্ট্রে ছুরিকাঘাতে নিহত ৪ সুইডেনে বসবাসের অনুমতি বাতিল কুরআন পোড়ানো শরণার্থীর

সকল