২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ডেল্টা প্ল্যান-২১০০

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আমলে নিতে হবে

-

আমরা জাতীয় উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করি। এসব পরিকল্পনা হাতে নেয়ার আগে ভেবে দেখা উচিত এর বাস্তবায়নের ফলে প্রভাব-প্রতিফল কী হবে। এ পরিকল্পনা জাতীয় জীবনে কতটুকু ইতিবাচক এবং কতটুকু নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে তা-ও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। একই সাথে এ পরিকল্পনার ব্যাপারে গভীরভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা দরকার। সব কিছু গভীরভাবে বিবেচনা করেই হাতে নেয়া প্রয়োজন যেকোনো জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা; কিন্তু বাস্তবে আমরা তা না করে অনেকটা হুজুগের বশে রাজনৈতিক লাভ- লোকসানের ক্ষুদ্র স্বার্থচিন্তা থেকে অনেক পরিকল্পনা নিয়ে থাকি। এর একটি জায়মান উদাহরণ হচ্ছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে দেখা যাবে, তা আমাদের লাভের চেয়ে ক্ষতিটাই বেশি করছে। এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে দেশে আন্দোলনও চলেছে; কিন্তু সরকার তা আমলে না নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে। এ দিকে একইভাবে সমালোচনা আসছে শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেনÑ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে গোটা বদ্বীপের তথা ডেল্টার ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়বে।
একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিক গতকাল এক শীর্ষ সংবাদে জানিয়েছেÑ শত শত বছর ধরে টিকে থাকা বিশ্বের বৃহত্তম আমাদের বদ্বীপ ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’-এর ফলে এর টিকে থাকার ভারসাম্য হারাবে। এমনটি বলছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে বদ্বীপের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পানি ও পলিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা হলে বদ্বীপে পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্যে ধ্বংসযজ্ঞ নেমে আসতে পারে। যদি এই পরিকল্পনার ত্রুটিগুলো দূর করা না হয়, তবে এই ধ্বংসযজ্ঞ নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করছেন ভূতত্ত্ববিদ ও পানি বিশেষজ্ঞরা।
অন্য দিকে, সরকার মনে করছেÑ সরকারের এই বদ্বীপ-পরিকল্পনা সৃষ্টি করবে সমৃদ্ধি, খাদ্যনিরাপত্তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বদ্বীপকে সুরক্ষা দেবে। কমিয়ে আনবে বদ্বীপ অঞ্চলে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের লক হেভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি তথা ভূতত্ত্ববিজ্ঞানের অধ্যাপক খালেকুজ্জামান ওই ইংরেজি দৈনিকটিকে জানিয়েছেনÑ এগুলো হচ্ছে সরকারের ভুল প্রতিশ্রুতি। এই পরিকল্পনা জন্ম দেবে নিরাপত্তার ভুল ধারণা।
আমরা মনে করি, এ ধরনের বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সরকারের উচিত এই পরিকল্পনা বিষয়ে বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ ও জনগণের মধ্যে বিতর্কের আয়োজন করা। যেসব মানুষ এই পরিকল্পনার ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হতে পারে, এ ব্যাপারে তাদের মতামত দেয়ার অধিকার রয়েছে। এমনটি অভিমত রেখেছেন অধ্যাপক খালেকুজ্জামানও। তার এই অভিমতের প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কারণ, তিনি এই পরিকল্পনার পানি সম্পর্কিত বিষয়াবলি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গত বছর সেপ্টেম্বরে এই পরিকল্পনার অনুমোদন দেয়। একই সাথে এই পরিষদ তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার ব্যয়ে এর ৮০টি প্রকল্প আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নেরও অনুমোদন দেয়। এ দিকে, গত মধ্য জানুয়ারিতে রাজধানীতে মিলিত হয়েছিলেন দেশী-বিদেশী বেশ কিছু বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ। তারা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এই পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে ভুল পরামর্শগুলো প্রত্যাহার করতে।
আমরা মনে করি, বিশেষজ্ঞরা ডেল্টা পরিকল্পনা নিয়ে যেসব আপত্তি তুলেছেন সেগুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখা দরকার। কারণ শেষ পর্যন্ত বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে যেসব নেতিবাচক প্রভাব বদ্বীপটির ওপর পড়বে, তার ক্ষতি কখনোই আর পোষাবার কোনো সুযোগ আমাদের হাতে থাকবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল

সকল