১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মুক্ত গণতন্ত্রের তালিকায় নেই বাংলাদেশ

ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদন নিয়ে ভাবতে হবে

-

সমাজের সর্বত্র বিরাজ করে নানা মুনির নানা মত। তারই সূত্র ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চালু আছে নানা রাজনৈতিক মহল ও দলের নানা মতবাদ। এসব মতবাদে রাজনৈতিক দল-মহলগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। আগামী দিনগুলোতে তা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায় না। কিন্তু যদি বলি বিশ্বে যত রাজনৈতিক মতবাদ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে কোন মতবাদটির? স্বীকার করতেই হবে, সেটি হচ্ছে অবাধ ও মুক্ত গণতন্ত্র। কারণ, এই মুক্ত গণতন্ত্র মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, পছন্দের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। কার্যকর গণতন্ত্র মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার-নির্যাতন, শোষণ-পীড়ন বন্ধ করতে পারে। সে জন্য রাজনৈতিক দল-মহলে তো বটেই, সাধারণ মানুষের কাছে গণতন্ত্রই হচ্ছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক মতবাদ। এ ক্ষেত্রে আমাদের জন্য একটি শুভ সংবাদ হচ্ছে, বাস্তব ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অনুশীলন না থাকলেও অন্তত কাগজে-কলমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই বৈধ বলে স্বীকৃত। আমাদের সংবিধানও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতিই সমর্থন জানায়; কিন্তু দুঃখজনক খবর হচ্ছে, বাস্তবে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের বড়ই অভাব রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউজ’-এর এক রিপোর্টে এ সত্যেরই প্রতিফলন পাওয়া যায়।
সংস্থাটির রিপোর্টে বলা হয়েছেÑ নাগরিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকারের বিচারে তৈরি মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নেই। সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশকে আংশিক মুক্ত গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ফ্রিডম হাউজ রিপোর্টে। সংস্থাটির ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড-২০১৯’ শীর্ষক এই রিপোর্টে দেখা যায়, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ৪১ পয়েন্ট লাভ করেছে। সুনির্দিষ্টভাবে রাজনৈতিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাত স্তরবিশিষ্ট নি¤œমুখী সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম স্তরে। একইভাবে নাগরিক স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশ পঞ্চম অবস্থানে। আর ১০০ স্তরবিশিষ্ট সূচকে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪১ পয়েন্ট।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নিরাপত্তাবাহিনী বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছে। তারা নন্দিত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও ভীতি প্রদর্শন করেছে। আর ব্যাপক অনিয়মের কারণে ওই নির্বাচন চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। একই সাথে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা ঘটেছে। ফলে এক ডজনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।
রিপোর্টে উল্লিখিত অভিযোগগুলো সরকারপক্ষ অস্বীকার করেই এ ব্যাপারে তাদের কর্তব্য সম্পন্ন করে। যেমনটি আমরা দেখেছি বাংলাদেশে সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত টিআইবি রিপোর্টের ব্যাপারে। টিআইবির রিপোর্টে ওই নির্বাচনে ব্যাপক অভিযোগের কথা সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরে; কিন্তু সরকার ওই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ামাত্র তৎক্ষণাৎ তা প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু ওই রিপোর্টে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের এমন সব অভিযোগ উচ্চারিত হয়েছে, যা সত্যিই দেশের সচেতন বিবেচকবান মানুষকে উদ্বিগ্ন করে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত এ ধরনের প্রতিবেদনগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে পড়ে দেখা এবং বাস্তবে এসব রিপোর্টে আমাদের গণতন্ত্রের যেসব উদ্বেগজনক দুর্বলতার চিত্রটি ফুটে উঠেছে, তা কাটিয়ে ওঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। আশা করব, সরকার এবার অন্তত সত্য উপলব্ধি করে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েমে নিজেদের সংশোধনের উদ্যোগ নেবে। দেশের সচেতন সাধারণ মানুষ এমনটিই চায়।


আরো সংবাদ



premium cement
সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার

সকল