১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নির্দোষ জাহালমের জেল খাটা

খোদ দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযুক্ত

-

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে অবশেষে গত সোমবার টাঙ্গাইলে গাঁয়ের বাড়ি ফিরেছেন জাহালম। ফিরেছেন মায়ের কোলে। সন্তান বিরহে পাগলপ্রায় মায়ের বুক জুড়িয়েছে তার বাড়ি ফেরায়। জাহালমের শিশুসন্তান, স্ত্রী ও স্বজনেরা দীর্ঘ তিন বছর প্রতীক্ষায় ছিলেন। গুনেছেন কষ্টের প্রহর। আপাতত তার কষ্ট ও যন্ত্রণার একটি পর্বের পরিসমাপ্তি হলো। এতে আমরা সবাই খানিকটা হলেও সন্তুষ্ট।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি মিলেছে জাহালমের। তার মুক্ত জীবনে ফিরে আসার জন্য আদালত যথার্থ ভূমিকা পালন করায় বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হলো। তা ছাড়া, যে সহযোগী দৈনিকটি গুরুত্ব দিয়ে নির্দোষ জাহালমের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেই পত্রিকা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ধন্যবাদ পওয়ার দারি রাখেন। জাহালমের মুক্তির ক্ষেত্রে যার যতটুকু ভূমিকা রয়েছে, সবাইকে আমরা জানাই অভিনন্দন।
তবে জাহালমের মুক্তিতেই আমরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারি না। হতে পারি না সন্তুষ্ট। কারণ, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব দেশ থেকে দুর্নীতিকে নির্বাসিত করা, দুর্নীতিবাজদের দমন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে সদা তৎপর থাকা। অথচ সেই দুদকের ভুলে বিনা দোষে দীর্ঘ তিন বছর জেল খাটলেন জাহালম। এতে তার পরিবার আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে, তেমনি ছিল তীব্র মানসিক যাতনা। এটি জাহালম ও তার পরিবারের জন্য নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি। পাটকল শ্রমিক জাহালম এই দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াবেন আজীবন। এর উত্তাপ তার স্বজনদেরও পোড়াবে। শুধু মুক্তি দিয়ে এর ক্ষতিপূরণ মেটানো সম্ভব নয়।
আর এটি যে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শুধুই ‘ভুল’ তা বলার সময় এখনো আসেনি। কেউ যে জাহালমকে ফাঁসিয়ে অপরাধীর সাথে আঁতাত করতে চাননিÑ সে কথা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এটি তদন্তসাপেক্ষ। মোটকথা, এ ঘটনা সহজভাবে নেয়ার কোনো অবকাশ নেই। যার যত বড় দায়িত্ব, তার ভুলের মাশুল দিতে হয় তত বড়। এ ক্ষেত্রে ‘দুদকের ভুলে’ জাহালমকে যে ভয়াবহ খেসারত দিতে হলো, সে জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সংস্থাটি ইমেজ সঙ্কটে পড়বে।
অভিযোগ রয়েছে, বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের হেনস্তা ও হয়রানি করতে সরকার দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এমন প্রেক্ষাপটে নির্দোষ জাহালমের জেল খাটার বিষয়টি আমরা সহজ ও স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে নিতে পারি না। এ ঘটনায় কে বা কারা দায়ী তা উদঘাটনে দুদক যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, সেটি প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র। দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করবেন, এই কমিটি কী প্রতিবেদন দেয় তা দেখার জন্য।
বিনা দোষে তিন বছর কারাবন্দী করে রাখায় জাহালমের পরিবার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। এ দাবি যথার্থ। এটি আমলে নিয়ে দুদক দ্রুত ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করলে সংস্থাটির আন্তরিকতার প্রমাণ মিলবে। আর দেশবাসীর কাছে কিছুটা হলেও নিজেদের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে এ ইস্যুর সমাধান দ্রুত করাই কাম্য।
যে ঘটনায় দুদক নিজেই আসামির কাঠগড়ায়, এটি ধামাচাপা দিলে আগামীতে দুদক যেসব পদক্ষেপ নেবে তা নিয়ে দেশবাসীর মনে প্রশ্ন থেকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল