২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সড়ক নির্মাণব্যয় বেড়ে চলা

সমীক্ষা ছাড়া কোনো প্রকল্প নয়

-

দেশে সড়ক যোগাযোগে উন্নতি ঘটছে; এ কথা অস্বীকার করার অবকাশ নেই। তবে সড়ক নির্মাণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেশি হচ্ছে, সে কথাও অস্বীকার করা যায় না। বিশেষ করে প্রতিবেশী ভারতে সড়ক নির্মাণব্যয়ের সাথে তুলনা করলে সে সত্যেরই প্রতিফলন মেলে।
বিশ্বব্যাংক ২০১৭ সালের ২০ জুন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে সড়ক নির্মাণব্যয় নিয়ে তুলনামূলক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে। তাতে বাংলাদেশের সড়ক নির্মাণব্যয়ের ব্যবধান তুলে ধরা হয়। অবশ্য সড়ক নির্মাণব্যয়ের সরলীকরণ করলে সে সত্যে পৌঁছানো কঠিন। কারণ, প্রতিটি দেশের ভূ-প্রকৃতি আলাদা। এ জন্য উন্নয়নকাজের গতি-প্রকৃতিভেদে ব্যয়েও ভিন্নতা থাকবে, এটিই বাস্তবতা; কিন্তু সেই ব্যবধান যৌক্তিক কি না তা-ও বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
এমনিতেই অর্থসঙ্কটে দেশে জনগুরুত্বপূর্ণ বহু উন্নয়নকাজ হাতে নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই কোনো প্রকল্প স্বল্পব্যয়ে সম্ভব হলে দেশে উন্নয়ন খরচ আরো সাশ্রয়ী হয়। সরকারিপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশ দ্রুত টেকসই অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
নয়া দিগন্তে গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোনো সমীক্ষা ছাড়াই দেশের অনেক উপজেলা ও ইউনিয়নে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে দুই হাজার ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ ২৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্প হলে সে জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। নিজস্ব অর্থায়নে ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়নের সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে সড়ক প্রশস্ত করা ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
অথচ বছর গড়াতেই দেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে সড়ক খাতে এ ব্যয় বেড়ে চলা থামানো যাচ্ছে না। চলমান রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে উপজেলাপর্যায়ে ব্যয় হবে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা; আর ইউনিয়নপর্যায়ে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণব্যয় এক কোটি ১৩ লাখ টাকা। ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়নে সড়ক উন্নয়নে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হবে এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অন্যান্য গ্রামীণ বিশেষ করে উপজেলা ও ইউনিয়নপর্যায়ে সড়ক উন্নয়নে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয় ৭০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলছে, প্রকল্পটি যুক্তিযুক্ত মনে হলে বিগত পাঁচ বছরে যেসব সড়ক নির্মাণ বা মেরামত করা হয়েছে, যেগুলো এখনই আবার না ভেঙে যখন মেরামতের প্রয়োজন হবে তখন যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীত করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত সড়কগুলো কত সালে নির্মাণ করা হয়েছে, কত সালে সর্বশেষ মেরামত করা হয়েছে এর একটা ডাটাবেজ ডিপিপিতে সংযুক্ত করা দরকার।
বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্ত ভিতে গড়তে ভৌত কাঠামো উন্নয়নের বিকল্প যেমন নেই, তেমনি কোনো প্রকল্পে অর্থ অপচয় করার অবস্থাও নেই। এ জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে সতর্ক পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই। তাই সমীক্ষা ছাড়া কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সুযোগ নেই, তা পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। কারণ, এতে অর্থের অপচয় হওয়ার ন্যূনতম আশঙ্কা রয়েছে কি না জানা যায়। অতএব, পরিকল্পনা কমিশনকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে এ সম্পর্কিত জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার

সকল