২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
রিজার্ভ চুরির ৩৬ মাস

অর্থ উদ্ধার হয়নি, জড়িতরা শনাক্ত হয়নি

-

যেকোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবচেয়ে সুরক্ষিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তির প্রভূত উন্নতির সাথে এর রক্ষণব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে। বিশেষ করে অর্থকড়ি লেনদেনের বিষয়গুলো অত্যন্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও সুনাম ছিল। এ ব্যাংক পেশাদারিত্বের দিক দিয়ে অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে অনেক অগ্রসর ছিল। হঠাৎ করেই যেন ব্যাংকটির পেশাদারিত্ব কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গেল। ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। টাকার অঙ্ক বড় কথা নয়, একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা চুরি যাবে, সেটা বড় ব্যাপার। ব্যাপারটি তদন্ত ও অর্থ উদ্ধারে যতটা গুরুত্ব পাওয়ার কথা, সেটা হয়নি। চুরি হয়ে যাওয়ার পর ৩৬ মাস অতিক্রম হলেও চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে কর্তৃপক্ষ কতটুকু অগ্রসর হয়েছে, জাতি জানে না।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, রিজার্ভ চুরির ৩৬ মাস পর অবশেষে মামলা করল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। এ ধরনের একটি মামলা যদি অর্থ উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে থাকে, তাহলে এ মামলাটি করতে তিন বছর লাগল কেন? সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই ওঠে। খবরে জানা যাচ্ছে, সুরক্ষিত সুইফট সিস্টেমের সাথে আরটিজিএস নামের একটি সফটওয়্যার সংযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ কেউ অতি উৎসাহী ছিলেন। আরটিজিএস সংযোগের পরই রিজার্ভ চুরি হয়। কারা অতি উৎসাহী ছিলেন তাও জানা যায়নি। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের অতি উৎসাহীদের শনাক্ত করা প্রয়োজন ছিল। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হয়। চুরি হওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকিং করপোরেশনের জুপিটার শাখায় ছিল ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেখান থেকে অর্থের বড় অংশ চলে যায় দেশটির ক্যাসিনোতে। আবার ক্যাসিনোতেও সেই অর্থ ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অর্থাৎ আরো ২০ দিন। সরকারকে সময়মতো অবহিত করলে চুরি হওয়া অর্থ হয়তো ফেরত আনা সম্ভব ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ অর্থের বেশির ভাগই ফেরত আনা সম্ভব ছিল। কিন্তু কেন সরকারকে জানানো হলো না, কারা বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নরকে ঘটনাটি না জানাতে পরামর্শ দিয়েছিল, তাও জানা যায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার চাপ প্রয়োগ করলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা টাকা উত্তোলন বন্ধ করা যেত। এরপর জুয়ার আসরে যাওয়ার পরও সরকারকে অবহিত করা হলে টাকা উদ্ধার করা সম্ভব ছিল। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা উদ্ধারের জন্য ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেয়া যেত।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া পদত্যাগপত্রে তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান লিখেছেন, ‘চুরি হওয়ার ঘটনা পরবর্তী কার্যদিবসেই বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে অবহিত করি।’ কিন্তু বিএফআইইউ সময়মতো এটি নিয়ে অগ্রসর হয়নি, অথচ এ দায় নিয়ে চাপের মুখে তৎকালীন আরো দুই ডেপুটি গভর্নরকে অপসারণ করা হয়। অর্থ উদ্ধার ও তদন্তের নামে এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। ঘণ্টায় প্রায় ৪০০ ডলার ব্যয়ে এক হাজার ৪০০ ঘণ্টা তদন্ত করেছে ফায়ার আই নামক একটি সফটওয়্যার কোম্পানি। এ ব্যয়বহুল তদন্তের ফলাফল কী তা জানে না দেশের জনগণ। পুরো ব্যবস্থার মধ্যে অনেক ধরনের গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, যাদের দায় ছিল তাদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। এর মাধ্যমে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের পাশাপাশি ভবিষ্যতে পুনরায় এ ধরনের চুরির ঘটনা রোধ করা যেতে পারে। অন্যথায় আবারো যেকোনো ধরনের অঘটন ঘটার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল