২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আইনশৃঙ্খলার অবনতি

পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত

-

বাংলাদেশে হত্যা খুন গুম একটি সাধারণ ঘটনা। কোনো মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, ক’দিন পর তার লাশ পাওয়া কিংবা তুচ্ছ কোনো ঘটনা নিয়ে কাউকে হত্যা করাÑ এ দেশে এখন তেমন কোনো ঘটনা নয়। ধর্ষণ ও ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যাও একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার। এর সাথে আছে শিশুদের ওপর পাশবিকতা। মাত্র সাত বছরের ছেলে শিশুকে যৌন নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। মানুষের মধ্যে পাশবিক আচরণের এমন সীমাহীন উগ্রতা বিবেকবানদের নিশ্চয়ই তুলছে ভাবিয়ে। যে কেউ যেকোনো সময় এর শিকার হয়ে যেতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে সব সময় একে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মাঝে মাঝে হত্যা খুন যখম ও পাশবিকতা সব সীমা অতিক্রম করে। তখনো সরকার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সন্তোষজনক বলে দাবি করা হয়।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, হঠাৎ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেশ অবনতি ঘটেছে। বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নওগাঁর ধামইরহাট থেকে গত বৃহস্পতিবার এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গোপালগঞ্জে উদ্ধার হয়েছে এক ইজিবাইক চালকের লাশ। জামালপুরের মেলান্দহে এক কৃষকের লাশ উদ্ধার হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা করা হয়েছে এক কিশোরকে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে সাবেক এক ইউপি মেম্বরকে। নরসিংদীর বিলাসদি রেলওয়ের জলাশয় থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়েছে। সাভারে অপহরণের চার দিন পরে জতীশ চন্দ্র নামে এক কাঠমিস্ত্রির লাশ উদ্ধার হয়েছে ধামরাই থেকে। বগুড়ার সান্তাহারে উদ্ধার হয়েছে মারুফ নামে এক অটোরিকশা চালকের লাশ। বরিশালে গত ১০ দিনে উদ্ধার হয়েছে ৯টি লাশ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আওয়মী লীগ নতুন মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের আগে থেকে সব কিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে ক্ষমতার মেয়াদ বর্ধিত হওয়ার পর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরো সংহত হয়েছে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। মানুষের মৃত্যুর যে বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হতে পারে হত্যাকারীরা পরোয়াহীন। অর্থাৎ নির্মম এসব ঘটনার জন্য তাদের কখনো বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না। এ ধরনের পরিস্থিতি বিগত বছরগুলোতে বেশি দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে খুনি ধর্ষক ও পিশাচেরা একধরনের অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে। কারণ তারা দেখতে পাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তিসামর্থ্য অপরাধীদের দমনে ব্যবহার হচ্ছে না। এমন সব এলাকায় এখন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে যেখানে খুন গুম হতো না। অর্থাৎ অপরাধ এখন দেশের শান্তিপূর্ণ এলাকাগুলোতেও বিস্তৃত হচ্ছে। আবার অপরাধীরা কিছু এলাকাকে তাদের নিরাপদ জোন হিসেবে ব্যবহার করছে। বরিশালে ১০ দিনে ৯টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী যদি পরিস্থিতি শান্ত ও সন্তোষজনক রয়েছে বলে দাবি করে, তাহলে অপরাধীরা আশকারাই পাবে।
বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় গত এক দশকে বড় ধরনের বিবর্তন ঘটেছে। এই সময়ে কোনো একটি ঘটনা ‘অপরাধ’ কি না সেটা বিবেচনার জন্য দলীয় দৃষ্টিকোণ প্রাধান্য পেয়েছে। ফলে অপরাধীরা শত অপরাধ করেও কোনো ধরনের বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে না। অন্য দিকে, অপরাধ না করেও অনেকে উপর্যুপরি জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের পরিবর্তে রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত অপরাধীদের পোয়াবারো, একই সাথে রাজনীতিকে ব্যবহার করে নতুন একদল দুষ্কৃতকারীর জন্ম হয়েছে। ফলে খুন চুরি ডাকাতিসহ পৈশাচিকতা বেড়ে গেছে। এর সাথে ধর্ষণ ও ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যা এবং শিশুদের ওপর নেমে এসেছে জঘন্য অত্যাচার। সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলে প্রধানত দরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সরকারকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ‘অপরাধকে’ দলীয় বিবেচনায় নেয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কেবল অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাদের সব শক্তি নিয়োগ করবে; কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়। তা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল