২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ঢাকার বাতাসে ভয়াবহ বায়ুদূষণ

কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি

-

বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের নিকৃষ্টতম শহরগুলোর একটি। এ দূষণমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। বায়ুদূষণ বড় ধরনের স্বাস্থ্যহুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকাবাসীর জন্য। বলা যায়, এ শহরের বায়ু বিষে ভরা, বিপজ্জনক ও অস্বাস্থ্যকর। এটি আমাদের জানা। তবে কতটা বিপজ্জনক ও ভয়ঙ্কর তা আমাদের জানা নেই। ‘সার্বক্ষণিক বায়ুমান সূচকে’ ঢাকার বাতাসের যে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে, তার দিকে চোখ বুলালে যে কেউ আঁতকে উঠবেন। শরীর হিম হয়ে আসবে। বেশির ভাগ ঢাকাবাসী জানেনই না, তারা কত ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণের শহরে বাস করছে। অন্যান্য দেশ পরিবেশ ও আবহাওয়া বিভাগ বায়ুদূষণের বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার চালিয়ে থাকে। আমাদের দেশে এসব কিছুর বালাই নেই। ফলে ঢাকাবাসী বিষয়টি সম্পর্কে রয়েছে এখনো অন্ধকারে। তাদের মধ্যে নেই কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সবাই যেন নির্বিকার।
গতকাল একটি সহযোগী দৈনিকের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সার্বক্ষণিক বায়ুমান সূচকে ঢাকার বাতাসের অবস্থান লাল। মানে অস্বাস্থ্যকর। বায়ুর মান নির্ণয়ের পদ্ধতি অনুসারেÑ বায়ুমান ভালো হলে সবুজ, মোটামুটি ভালো হলে হলুদ, কারো জন্য অস্বাস্থ্যকর হলে কমলা, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর হলে লাল, অতি অস্বাস্থ্যকর হলে বেগুনি আর বিপজ্জনক হলে খয়েরি রঙ নামের সূচকে চিহ্নিত করা হয়। গত চার বছরে সূচকে ঢাকার বাতাসের রঙ সবুজ তো দূরের কথা, হলুদ এমনকি কমলাও দেখা যায়নি। বেশির ভাগ সময় ছিল বেগুনি, যা অতিমাত্রায় অস্বাস্থ্যকর। অস্বাস্থ্যকর বায়ুর কারণে ঢাকাবাসী স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে পারে, এমন হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বক্ষব্যাধির রোগী ও শিশুদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ছে। দীর্ঘ দিন ধরে দূষিত বায়ুর মধ্যে থাকলে ফুসফুস, লিভার বা কিডনির ক্যান্সার হতে পারে। বায়ুতে থাকা সিসা, যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ফলে মানুষ দ্রুত বুড়িয়ে যায়, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষ করে, শিশুরা দুর্বল বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বেড়ে ওঠে। এ ছাড়া বায়ুতে থাকা ক্ষতিকর বস্তুকণা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুস শক্ত হয়ে অক্সিজেন প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে ক্যান্সারসহ নানা রোগ জন্ম নেয়।
ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা, সড়কের ধুলা, যানবাহন, জৈবগ্যাস পোড়ানো ও অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ দায়ী। ঢাকার বায়ুদূষণে ইটভাটা ৫৮ শতাংশ, সড়কের ধুলা ১৮ শতাংশ, যানবাহনের ধোঁয়া ১০ শতাংশ, জৈবগ্যাস পোড়ানো ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণ ৬ শতাংশ দায়ী।
অন্যান্য দেশে বায়ুমান সূচক বিপজ্জনক, এমনকি অস্বাস্থ্যকর দেখালেই সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। শহরের উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রেও মানা হয় পরিবেশ সম্পর্কিত সব আইনকানুন। বায়ুর মান বিপজ্জনক বা অস্বাস্থ্যকর হলে স্কুল-কলেজ ছুটি দিয়ে দেয়া হয়। আমাদের দেশে বিষয়টি নিয়ে সরকারি-বেসরকারি কোনো সংগঠন বা সংস্থার তেমন সচেতনতামূলক কর্মসূচি চোখে পড়ে না।
ঢাকার এই ভয়াবহ ও অতি বিপজ্জনক বায়ুদূষণ থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দিতে সরকারের প্রতি আমাদের তাগিদ হচ্ছেÑ এই বায়ুদূষণ থেকে মুক্ত করতে রাজধানীর নৌপথগুলো ফের সচল করতে হবে। ঢাকার চার পাশের নদীগুলোর মাধ্যমে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করা যেতে পারে। দূষণ রোধে যেসব আইন আছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেসব আইন বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হতে হবে। যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ জলবায়ুর সাথে সংশ্লিষ্ট, সেগুলোকে দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় সাহায্য বাড়াতে ইসরাইলকে নির্দেশ আইসিজের দিল্লি হাইকোর্টে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা খারিজ বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু দূষণে

সকল