২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিচার ছাড়াই ৪৬৬টি হত্যা

তদন্ত ও বিচার হওয়া দরকার

-

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক) ২০১৮ সালের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর হাতে মানুষের বিচারবহির্ভূত প্রাণহানির সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা আসক নিজেই গত বছরের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং তাদের হেফাজতে মোট ৪৬৬ জন নিহত হয়েছেন। অন্য মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের হিসাবে, গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৫৬ জন। ২০১৭ সালের তুলনায় তিন গুণ মানুষ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের দাবিÑ দেশে গণতান্ত্রিক শাসন চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে আবার বলা হচ্ছে, এই গণতন্ত্রে উন্নয়ন প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু মানুষ যদি বিচার না পায় আর বাঁচতে না পারে, তাহলে এ ধরনের উন্নয়ন দিয়ে কী হবে। প্রথমে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে সরকারকে।
২০১৮ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যা আগের বছরের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানকে দেখা যাচ্ছে। ওই বছরের ৪ মে থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত ওই অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ২৯২ জন। ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে এত মানুষের প্রাণহানি কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। সেটি যদি মাদক নির্মূলের জন্যও হয়, তাহলে সেটি বৈধ হয়ে যায় না। প্রকাশিত বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন ৩৪ জন। এর মধ্যে ১৯ জনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার রয়েছেন। গত বছর জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে অন্তত ৪৭০টি সহিংসতার ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও অন্যান্য দলের এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জেরে ৭০১টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনায় ৬৭ জন নিহত এবং সাত হাজার ২৮৭ জন আহত হয়েছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের কয়েকটি স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এই সময়ে দেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭৩২ জন। তাদের মধ্যে ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৬৩ জন আর ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। গত বছর গৃহকর্মী নির্যাতন ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে ৫৪টি আর যৌতুকের কারণে এবং পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৯৫ জন নারী। গত বছর ২০৭ জন সংবাদিক আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, সন্ত্রাসী, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতন ও হামলার শিকার হয়েছেন। হত্যার শিকার হয়েছেন তিনজন সাংবাদিক। এক হাজার ১১টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৪৪টি শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়। গত বছর গায়েবি মামলার বিষয়টিও আসকের প্রতিবেদনে উঠে আসে। শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় পুলিশ বাদি হয়ে ৫৭৮টি নাশকতার মামলা করেছে।
বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে বিচারবিভাগীয় তদন্ত অনুষ্ঠানের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত-পরবর্তী বিচারের জোর দাবি জানাই। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও অসংখ্য মানবাধিকার হরণের ঘটনা উঠে এসেছে মানবাধিকার প্রতিবেদনে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের অধিকার হরণের ঘটনা অবলীলায় চলতে পারে না। আমরা এ ধরনের ঘটনার অপনোদন চাই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে : কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪ ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু

সকল