২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বিআরটিসি শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

বেতন নিয়মিত পরিশোধ করুন

-

দেশের বিভিন্ন খাতের শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা ও বেতনভাতা নিয়ে আছে নানা অসন্তোষ। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তৈরী পোশাক শিল্প খাতে এখন চলছে শ্রমিক অসন্তোষ। বেতনকাঠামোর অসঙ্গতি নিরসন এবং অনেক তৈরী পোশাক শিল্পের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতেও মাঝে মধ্যে ওই শিল্প খাতের শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামছেন। এতে গোটা শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এ দিকে দেশে যখন তৈরী পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে, তখন আমরা আরেকটি খাতেও অসন্তোষের খবর গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি।
জানা যায়, বিআরটিসির (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন) ডিপোগুলোতে অপরিশোধিত বেতনের কারণে শ্রমিকদের অসন্তোষ চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। কোনো কোনো ডিপোর শ্রমিকেরা ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। সারা দেশে বিআরটিসির ২১টি ডিপো রয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি বাস ডিপো এবং দু’টি ট্রাক ডিপো। এগুলোর মধ্যে ১৭টি ডিপোর শ্রমিকদেরই বেতন বকেয়া পড়েছে তিন থেকে ১৬ মাসের। তাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই সরকারি সংস্থার ঢাকার জোয়ারসাহারা ডিপোর ২৫০ জন শ্রমিক অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন। বিআরটিসিতে কাজ করছেন, এমন তিন হাজার ৫০০ জন বেতন ও ভাতা সরকারি চাকুরেদের মতো পেয়ে থাকেন; কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থায় ডিপোতে চাকরিরতদের বেতনভাতা সংশ্লিষ্ট ডিপোর আয় থেকে পরিশোধ করা হয়। এই আয়ের বেশির ভাগই আসে বেসরকারি সংস্থার কাছে বাসগুলো লিজ দেয়ার মাধ্যমে। কিছু বাস লিজ দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে। ডিপো জোগান দেয় চালক ও জ্বালানি। তা ছাড়া, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে বিআরটিসি; কিন্তু ডিপোগুলোর শ্রমিকেরা রীতিমতো বেতনভাতা পাচ্ছেন না।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শ্রমিকেরা তাদের দীর্ঘ দিনের বেতনভাতা বকেয়া পড়ার কারণে নিশ্চিতভাবে নিদারুণ অর্থকষ্টে রয়েছেন। এমনিতেই তারা যে বেতনভাতা পান, তাতে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তার ওপর, বেতন বকেয়া পড়ায় তাদের ওপর দুঃসহ বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। সেটি অনুমান করতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বর্তমান ব্যবস্থায় ডিপোর আয় থেকে তাদের বেতন পরিশোধ করার নিয়ম চালু থাকলে এই অসুবিধা দূর হবে না। এ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখলে ডিপোর আয় বাড়ানোর জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে অন্য সরকারি কর্মচারীদের মতো প্রতি মাসে তাদের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা অবিলম্বে করতে হবে। বেতনভাতা না পেলে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালনের আশা করা যায় না। আশা করি, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে ডিপোগুলোর বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধসহ ভবিষ্যতে প্রতি মাসে বেতন দেয়ার ব্যবস্থা করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement