২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিরোধী পক্ষের প্রচারে হামলা-সংঘর্ষ

নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকায়

-

বিরোধী পক্ষের প্রার্থীদের ওপর হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আনুষ্ঠানিক প্রচারের চতুর্থ দিন গত বৃহস্পতিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার শিকার হয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। বাধা দেয়া হয়েছে প্রচারে। এ দিন অন্তত ৩০টি নির্বাচনী এলাকায় বাধা দেয়া হয়েছে, হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে একটি জাতীয় দৈনিক।
অপর একটি জাতীয় দৈনিকের খবর মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে হামলা, গ্রেফতার এবং সঙ্ঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাত থেকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ২৩টি জেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ঢুকে বিএনপি প্রার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পাবনায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবু সাইয়িদের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। যশোরে বিএনপি প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিকেরাও মারধরের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। খবরে প্রকাশ, মাহমুদুর রহমান মান্না ও আ স ম আবদুর রবের প্রচারে বাধা দিয়েছে সরকারদলীয় সমর্থকেরা। ঢাকা-১৮ আসনের শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের প্রচারেও বাধা দেয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গল ও বুধবার অন্তত ৩৫ জেলায় হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একই সাথে গ্রেফতারও অব্যাহত রয়েছে। গত পরশু গাজীপুর-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফজলুল হক মিলনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিলনসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিরোধী জোটের কমপক্ষে ২৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশÑ এমনটি জানিয়েছে অপর একটি জাতীয় দৈনিক। দৈনিকটি আরো জানায়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ১৫৮টি মামলা দায়ের ও দুই হাজার ৫৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ১৫টি মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৫৬ জনকে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গত পরশু দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
গতকালের প্রতিটি জাতীয় দৈনিকে এ ধরনের অসংখ্য হামলা-মামলা-গ্রেফতার-হয়রানি ও নির্বাচনী সংঘর্ষ এবং প্রচারে বাধা দেয়ার অসংখ্য ঘটনার খবর ছাপা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে নির্বাচনী সংঘর্ষের উত্তাপ ততই বাড়ছে। এই যে বিরোধী পক্ষের ওপর সরকার পক্ষের সমর্থকদের হামলা, তার পক্ষে সাফাই গাইতে শোনা যাচ্ছে সরকারি দলের সমর্থকদের। ফলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে সংশয় বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য হচ্ছেÑ এসব ঘটনায় বিব্রতবোধ করছে; কিন্তু এসব বন্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন পথে ফেরানোর জন্য নির্বাচন কমিশন তৃতীয় শক্তির কথা বলছে। জনগণের বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন নিয়ে চলমান এসব শঙ্কা দূর করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের; কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জাগছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement